চকরিয়া থানা হাজতে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু!
পরিবারের দাবি হত্যা

চকরিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকা এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ এটিকে আত্মহত্যা বললেও পরিবারের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যা।

আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে যুবকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত দুর্জয় চৌধুরী (২৫) চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরী হিন্দুপাড়ার বাসিন্দা কমল চৌধুরীর ছেলে।

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাতে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানম লিখিত অভিযোগসহ দুর্জয়কে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। তবে শুক্রবার ভোরে হাজতের কক্ষে নিজের পরনের শার্ট দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

তবে স্থানীয়রা জানায়, দুর্জয় খুবই নম্র ও ভদ্র ছেলে। এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নাই। তার সাথে কারও ঝগড়া নাই। তেমন লেনদেনও নাই কারও সাথে। সে বিভিন্ন সময় পুরস্কারও পেয়েছে।

নিহতের পিতা কমল চৌধুরী বলেন, আমার ছেলেকে তারা হত্যা করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। আমার ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে একটাও প্রমাণিত হয়নি। প্রধান শিক্ষকসহ সবাই মিলে তাকে গতকাল থানায় নিয়ে গেছে। আমি তাদের বলেছি, আমার ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তার জন্য থানায় বা ইউএনওর কাছে গিয়ে হলেও আমি বসে সমাধান করব। যদি টাকা চুরি হয়ে থাকে সবটা নিজের জায়গা বিক্রি করে হলেও দিব বলেছি। তারপরও তারা আমার ছেলেটাকে বাঁচতে দিলো না।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খানমের  মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন জানান, গতকাল চকরিয়া সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের একটি চেক জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ পাই আমরা। অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্জয় চৌধুরীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। গতকাল রাত ১:২২ মিনিটের দিকে সে ছটপট করে বলে জানায় পাশের তিনজন কয়েদি। এরপর সে সিসি ক্যামারার বাইরে চলে যায় এবং আনুমানিক ভোর ৪টার দিকে আত্মহত্যা করে বলে ধারণা করা হয়। আমরা তদন্ত করার জন্য টিম গঠন করেছি। কেউ যদি জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ঘটনার খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রূপায়ন দেব হাজতে গিয়ে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।

চাটগাঁ নিউজ/জুবাইরুল/এমকেএন

Scroll to Top