গিলে খাওয়া পাহাড় উদ্ধারে সিডিএ’র অভিযান, ভাঙা হচ্ছে নির্মাণাধীন ভবন

চসিক-পরিবেশ অধিদপ্তরের পর এবার সিডিএ'র হানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রশাসন-পরিবেশ অধিদপ্তর ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) ম্যানেজ করেও শেষ রক্ষা হলো না পাহাড় কেটে নির্মাণ করা নগরীর আসকার দিঘির পাড়ের ভবনটি। এবার চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অভিযানে সবই যেন লন্ডভন্ড। ভেঙে ফেলা হচ্ছে নির্মাণাধীন ভবনটি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ- পাহাড় কেটে নকশা বহির্ভূত ভবন নির্মাণ।

সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা ১১টায় নগরীর এস এস খালেদ রোড আসকার দিঘির পাড়ে সিডিএ চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতেই নির্মাণাধীন বহুতল ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, ৩০ কাঠার জমিতে স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ জায়গা খালি রেখে ভবন নির্মাণের শর্তে অনুমোদন দেয় সিডিএ। শর্ত ছিল- পাহাড়ের কোনও ক্ষতি না করেই করতে হবে স্থাপনা নির্মাণ।

তবে সিডিএ’র কোন শর্তই মানেনি ভবনটির মালিক পক্ষ, টিনের বেস্টনি দিয়ে লোকচক্ষুর অন্তরালে গিলে খেয়েছে সম্পূর্ণ পাহাড়। পাশাপাশি শর্ত না মেনে পুরো জায়গাজুড়ে শুরু হয় ভবন নির্মাণ।

জানা যায়, এর আগেও খবরের কাগজে এই পাড়াহ নিয়ে ছিল বেশ গুঞ্জন। প্রশাসন-পরিবেশ অধিদপ্তর ও সিটি কর্পোরেশনের একাধিক অভিযানও বন্ধ করতে পারেনি পাহাড় কাটা। অর্থজোরে ম্যানেজ হয়েছিলেন অনেকেই।

২০২০ সালের ১ জুন পরিবেশ অধিদপ্তর পাহাড় কাটার দায়ে ২৮ লাখ টাকা জরিমানা করে এই ভবণের মালিক পক্ষকে। এই জরিমানার পরও দমাতে পারেনি পাহাড় কাটা।

এরপর ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি ওই ভবনে অভিযান চালায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। বন্ধ করে দেয় পাহাড় কেটে বাড়ি নির্মাণ। তবে চসিকের অভিযানও দমাতে পারেনি এই ভবণের মালিক পক্ষকে।

চসিক সূত্রে জানা যায়, ‘স্বপ্নীল ফ্যামিলি ওনার্স’ নামের একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আসকারদিঘির এই পাহাড় কেটে নির্মাণ হচ্ছিল বহুতল ভবন।

সিডিএ সূত্রে জানা যায়, নগরীর আসকার দীঘির পাড়ের ওই পাহাড়ের ঢালের সর্বোচ্চ চূড়া ১২৭ ফুট উঁচু। সিডিএ’র নির্মাণ কমিটির কাছ থেকে তিনটি বেজমেন্ট ও ১৪ তলা ভবনের অনুমোদন নেয় ভবন মালিকরা। বাস্তবে পাহাড় হলেও সরকারি রেকর্ডে বাড়ি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যা জামালখানের এস এস খালেদ রোডে গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকের পাহাড় নামেই পরিচিত।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট নজরুল ইসলাম বলেন, পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করায় কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয় সিডিএ। কিন্তু তারা এ নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে। আদালত ২০ এপ্রিল তাদের আবেদন খারিজ করে দিলে আজ (২১ এপ্রিল) আমরা অভিযানে এসেছি। ভবন ভাঙার কাজ চলছে।

চাটগাঁ নিউজ/এইচএস/এমকেএন

Scroll to Top