চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: খাগড়াছড়িতে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় সৃষ্ট উত্তেজনা ও সহিংসতায় রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) গুলিতে নিহত তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহতরা সবাই খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার বাসিন্দা।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গুইমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের আথ্রাউ মারমা (২৪), লিচুবাগান এলাকার আথুইপ্রু মারমা (২৬) ও বটতলাপাড়ার থোয়াইচিং মারমা (২৪)।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন মো. ছাবের জানান, নিহতদের মরদেহ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে রোববার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, গুইমারার রামসু বাজার এলাকায় পাহাড়ি দুর্বৃত্তদের গুলিতে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
একইদিন উক্ত ঘটনায় মারমা জনগোষ্ঠী সম্পৃক্ত নয় জানিয়ে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার আহবানে মারমাদের দুইটি পৃথক সংগঠন একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করে।
বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের সভাপতি মংখই মারমা এবং বাংলাদেশ মারমা উন্নয়ন সংসদের সাধারণ সম্পাদক নিয়ং মারমা স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, শান্তিপ্রিয় মারমা জনগোষ্ঠী কোনোভাবেই এই সহিংস ঘটনার সাথে জড়িত নয় এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাতকে কোনোভাবে সমর্থন করে না। মূলত ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’ এর ব্যানারের আড়ালে একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল পাহাড়ি জনগণকে ব্যবহার করে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা তৈরী করছে। এই ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে আমরা মারমা জনগোষ্ঠীসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালি সকল নাগরিককে সজাগ থাকার আহবান জানাচ্ছি।
এদিকে ধর্ষণের প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার অনির্দিষ্টকালের সড়ক অবরোধ চললেও দুপুর ১২টা থেকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে অবরোধ আংশিক শিথিল করা হয়। ফলে দূরপাল্লার যান চলাচল শুরু হয়েছে।
বর্তমানে খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় প্রশাসনের আহুত ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, উদ্ভুত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে। আজ কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিগগিরই ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতা অবরোধের ডাক দেয়, যা এখনো আংশিকভাবে চলছে।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ