চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : জিনিয়াস মেধাবৃত্তি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, শিক্ষা ছাড়া প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকা যাবে না। তাই জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সূদুর প্রসারী পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
শনিবার (২৪ মে) বিকাল ৩টায় চট্টগ্রাম নগরীর এলজিইডি মিলনায়তনে ‘জিনিয়াস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত মেধাবৃত্তি পুরস্কার বিতরণ ও শিশু উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কৃর্তি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মেয়র বলেন— ‘তোমরা বড় হও, মানুষ হও, মানবিক হও, মহৎ হও। বঞ্চিত, নিরন্ন, অভাবী মানুষকে বুকে ঠাঁই দিয়ে এই দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোল। আমার বিশ্বাস তোমাদের হাত ধরেই এই দেশ সোনার বাংলায় পরিণত হবে। বিশ্বের দরবারে মাথা উচুঁ করে দাঁড়াবে অমিত সম্ভাবনার এই মাতৃভূমি।’
মেয়র শাহাদাত আরও বলেন, ‘যেকোন সামাজিক সংগঠন ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশ তথা সমাজের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহণ করলে তা সফল হতে বাধ্য। বিগত ১৪ বছর ধরে জিনিয়াস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন শিক্ষার্থীদের মেধাচর্চার যে ক্ষেত্র সৃষ্টি করেছে তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। যেকোন মূল্যে এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য জিনিয়াস সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ রইলো।
জিনিয়াস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে আশিক আরেফিন ও বিলকিছ আকতারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সংবাদিক ইউনিয়নের (সিএমইউজে) সভাপতি মো. শাহ নওয়াজ, লেখক ও গবেষক অধ্যক্ষ শিমুল বড়ুয়া, ইতিহাস গবেষক ও লেখক জামাল উদ্দিন, জিনিয়াস উপদেষ্টা মুহাম্মদ আবু ছৈয়দ সিআইপি, ওপেলিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান লায়ন মো. সাজ্জাদ উদ্দিন, লেখক-বাচিকশিল্পী রেবা বড়ুয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি বলেন, ‘আজকের মেধাবী শিশুরাই এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে শুধু শিক্ষা অর্জন করলেই হবেনা। মানুষকে ভালবাসতে হবে। এ জন্য আগামী দিনের কর্ণধার যারা তাদের মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে হবে। সুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। জিনিয়াস শিক্ষার্থীদের মেধাবিকাশে যে ভূমিকা রাখছে তা প্রশংসার দাবিদার।’
বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহ নওয়াজ বলেন, ‘একটি দেশ এগিয়ে যায় শুধু শিক্ষার জোরে। ইউরোপ আজ সারা বিশ্ব শাসন করছে শুধু শিক্ষার জোরে। আমিও বলতে চাই, তোমরা শিক্ষার আলোয় এই দেশকে ভরিয়ে তোল। তোমাদের মধ্যে এদেশের ভবিষ্যত নিহিত।’
অধ্যক্ষ শিমুল বড়ুয়া বলেন, ‘সার্টিফিকেট অর্জন করা সহজ কিন্তু প্রকৃত মানুষ হওয়া অনেকটা কঠিন। শারিরীক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে দেশ ও জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে যারা প্রকৃত মানুষ হবে তারাই দেশের সম্পদ হিসেবে পরিগণিত হবে।’
ইতিহাস গবেষক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশকে ক্ষুদা ও দারিদ্র্য্যমুক্ত, কল্যাণধর্মী রাষ্ট্রে উন্নীত করতে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। নীতির প্রশ্নে অটুট থেকে আত্মকেন্দ্রিকতা পরিহার করে আলোকিত মানুষ হয়ে আলোকিত সমাজ ও দেশ গড়তে ভূমিকা পালন করতে হবে।’
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জিনিয়াস যুগ্ম সচিব সুশান্ত কুমার শীল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রিদওয়ানুল হক, সদস্য রাশেদুল আলম চৌধুরী, নাট্যজন মীর জুবেদ, মিডিয়া সেক্রেটারি ইমরান বিন ইসলাম, দিদারুল ইসলাম, মুহাম্মদ নাছিম উদ্দিন, মুহাম্মদ সাহেদুর রহমান, দিদারুল ইসলাম, ইমতিয়াজ রহমান খান, ইরতেজাউর রহমান, সানজিদা শাহরিন, তানজিম আহমেদ, সাঈদ মো. সাইমুন সাকিব।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৮৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার হিসেবে ল্যাপটপ, নগদ অর্থ, ক্রেস্ট, সনদ, বইসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ