নিজস্ব প্রতিবেদক : চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, নগরীর ফুটপাত উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান থাকবে। কোনো প্রভাব আমাকে দমাতে পারবে না। আমরা চাই ফুটপাতগুলো দখল মুক্ত থাকুক। আমরা কারো ওপরে জুলুম বা নির্যাতন করছি না।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এ কথা বলেন।
তবে বেলা ১২টায় নগরীর টাইগারপাস চসিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করার কথা থাকলেও মেয়র আসেন প্রায় ১ ঘণ্টা পর। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি।
মেয়র দাবি করেন, গত তিন বছরে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ ও বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছেন। পাশাপাশি জলাবদ্ধতা নিরসনে নগরের ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খালটি খনন কাজ চলছে বলে জানান। যার অবকাঠামোগত কাজের অগ্রগতি ৬০ শতাংশ হয়েছে বলে দাবি তাঁর। এছাড়া নগরের যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, নগর পরিকল্পনা, রাজস্ব আদায়, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেক্টরে তিনি উন্নয়ন করেছেন বলে উল্লেখ করেন।
জলাবদ্ধতা নিরসন নিয়ে মেয়রের নির্বাচনী ইশতেহারে বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে সংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নগরের বেশিরভাগ খালগুলো খননের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিডিএ। চসিক মাত্র একটি খালের কাজ করছে। যা আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেপুরোপুরি শেষ হবে। তবে জলবদ্ধতা নিরসনে যতদিন পর্যন্ত নগরের মানুষ সচেতন না হবে ততদিন পর্যন্ত এ বিপদ থেকে আমরা মুক্ত হতে পারবো না। ঘরের কাঁথা-বালিশ থেকে শুরু করে ভাঙা চৌকি পর্যন্ত খালে পড়ছে। সচেতনতা যদি মানুষের মধ্যে না আসে তাহলে মেয়রের ওপর দোষ চাপিয়ে লাভ নেই। কেউ নালায় ময়লা ফেললে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দেন তিনি।
সম্প্রতি ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযান করতে গিয়ে চসিক ম্যাজিস্ট্রেট ও কর্মীদের উপর হামলা করে নিউমার্কেট এলাকার হকাররা। এ বিষয়ে মেয়র বলেন, নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকানপাঠ উচ্ছেদ করি। কিন্তু তারা আবার ফুটপাত দখল করে দোকান বসানোর চেষ্টা করে। অভিযান দল ঘটনাস্থলে গেলে আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট, কর্মী, সেবকদের উপর হামলা চালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এসময় পুলিশ আহত হয়েছে। তারা এতো দুঃসাহস পায় কোত্থেকে।
সাংবাদিকদের অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমি ধীরে কাজ করি। কিন্তু যা করি তা শক্তভাবে করি। নাহলে শেভরনের সামনের ফুটপাত উচ্ছেদ করতে পারতাম না।
নগরীর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে মেয়র জানান, চট্টগ্রামে ৭২টি খাল ছিল। তার মধ্যে এখন ৫৭টি খাল আছে। যার মধ্যে ৩৬টি খালের কাজ করছে সিডিএ। চসিক শুধু বাড়ই পাড়া খালের করছে। ২০২৪ সালের শেষ দিকে কাজটি সম্পন্ন শেষ হবে।
বিপ্লব উদ্যান প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র জানান, বিপ্লব উদ্যানের যে অবস্থা মনে হয় তা দোকানদারদের হয়ে গেছে। দোকানগুলি আমি পারলে এখনই তুলে দিই। কিন্তু চুক্তির কারণে তা পারছি না। আমি তাই এটিকে এখন একটি কার্যকর উদ্যান করতে চাচ্ছি।
চসিকের বিভিন্ন কর্মকর্তারা দুর্নীতির সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের চসিক মেয়র রেজাউল করিম বলেন, চসিকের যেসব কর্মকর্তা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত তাদের আমি শাস্তি দিয়েছি। বদলি করেছি,শোকজ করেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমি জিরো টলারেন্স অবস্থানে আছি। দুদক যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ দিবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীসহ আরও অনেকে।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ