কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঝরে গেল আরও ১১ প্রাণ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের চলা আন্দোলনে পুলিশ-ছাত্রলীগ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে পর্যন্ত ১১ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাজধানীর উত্তরা, রামপুর, সাভার ও মাদারীপুর ও নরসিংদীতে একজন করে মোট ১১ জন মারা গেছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট, ছররা গুলি নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। সেখানে অংশ নিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীরাও।

উত্তরায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

এরমধ্যে রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রাজধানীর উত্তরায় পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন এছাড়াও সংঘর্ষে আরও শতাধিক শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। যার মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট মিজানুর রহমান।

নিহতদের নাম- পরিচয় এখনও জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজধানীর উত্তরায় পুলিশ ও র‍্যাবের সংঘর্ষ হয়েছে। এরপর থেকে ঢাকা–ময়মনসিংহ সড়কের উত্তরা অংশে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সংঘর্ষের সময় সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ ও র‍্যাব। আন্দোলনকারীরা হাউজ বিল্ডিং থেকে রাজলক্ষ্মী মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান করছেন।

বাড্ডা-রামপুরায় পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে কলেজ ছাত্রসহ ২ জনের মৃত্যু

রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় পুলিশ ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় সংঘর্ষে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুইজন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন শতাধিক।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম জিল্লুর রহমান। তিনি ইমরেপিয়াল কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার বাসা আফতাবনগরে। আরেকজন পথচারী ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নিহত জিল্লুরের চাচা মিসবাহ বলেন, আমার ভাতিজাকে নিথর অবস্থায় বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। এখন আমি বাড়িতে কি জবাব দেব?

সাভারে গুলিতে এমআইএসটিতে এক শিক্ষার্থী নিহত

কোটা সংস্কার আন্দোলনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, নিহত ওই শিক্ষার্থী এমআইএসটিতে অধ্যয়নরত ছিলেন।

সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার ইউসূফ আলী বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে।’

পুলিশের ধাওয়ায় লেকে পড়ে আন্দোলনরত কলেজছাত্রের ‍মৃত্যু

মাদারীপুরে কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনের সময় পুলিশের ধাওয়ায় শকুনি লেকে পড়ে নিখোঁজ শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত শিক্ষার্থীর নাম দিপ্ত দে (২১)। তিনি মাদারীপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মনিরুজ্জামান ফকির মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ধানমন্ডি ২৭ ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র পুলিশের গুলিতে ধানমন্ডি-২৭ এ মারা গেছে। লালমাটিয়ায় একটি হাসপাতালে তার লাশ রাখা আছে।

নরসিংদী

নরসিংদী সদর উপজেলায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে তাহমিদ তামিম (১৫) নামে এক স্কুলশিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। নরসিংদী জেলা হাসপাতালের আরএমও মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, তার গায়ে রাবার বুলেটের চিহ্ন আছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে সদর উপজেলার ভেলানগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত তাহমিদ তামিমের বাড়ি সদর উপজেলার চিনিশপুরে। সে নরসিংদী এন কে এম হোমস অ্যান্ড স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে/এসএ

Scroll to Top