আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় চার ঘণ্টার টানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৬ জনে দাঁড়িয়েছে। রাজ্যের ওয়ানাড জেলায় পাহাড়ি এলাকার চা বাগানে তিন দফার ভূমিধসে আরও শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। মঙ্গলবার মধ্যরাতের দিকে ভূমিধসের এই ঘটনা ঘটেছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ওয়ানাড জেলার কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভারী বর্ষণের পর পাহাড় ধসে চা শ্রমিক ও গ্রামবাসীদের বাড়িঘরে আচমকা কাদা, পানি ও পাথরের স্তূপ আঘাত হানে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলেছে, ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পরিচিত রাজ্য কেরালার ওয়ানাড জেলায় সোমবার প্রবল বৃষ্টিপাতের পর মধ্যরাতের দিকে পাহাড়ি ঢলে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন।
টেলিভিশনে প্রকাশিত ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, উদ্ধারকারী কর্মীরা উপড়ে পড়া গাছ ও কাদামাটির নিচে চাপা পড়া টিনের ঘরের কাঠামোর মধ্যে কাজ করছেন। এ সময় পাথরের স্তূপের ফাঁক দিয়ে ঘোলা পানি প্রবাহিত হতে দেখা যায়।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, ওয়ানাডে ভূমিধসে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে ৮৪ জনে পৌঁছেছে। এই ঘটনায় আরও শত শত মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর মুখপাত্র পিএম মনোজ টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া পানির স্রোতে নদীতে অনেকের দেহের অংশ পাওয়া যাওয়ায় ঠিক কতজন মারা গেছেন, তা গণনা করা কঠিন।
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বুক পর্যন্ত কাদায় আটকে ছিলেন। পরে কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় উদ্ধারকর্মীরা শেষ পর্যন্ত তার কাছে পৌঁছান। রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে প্রায় ৩৫০টি পরিবার বাস করতো। তাদের বেশিরভাগই চা এবং এলাচের বাগানের কর্মী। এখন পর্যন্ত ২৫০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং আরও অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।
এক বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাছের শহর চুরামালার সাথে সংযুক্তকারী একটি সেতু ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে একটি বিকল্প সেতু নির্মাণে সাহায্য করার জন্য সেনা প্রকৌশলীদের সহায়তা নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবারের এই ভূমিধসের ঘটনা কেরালার ২০১৮ সালের এক বিপর্যয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। ওই বছর কেরালায় ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৪০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস