চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর বোয়ালখালী অংশে ট্রেনের সঙ্গে কয়েকটি গাড়ির সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাত সোয়া ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে দুই বছর বয়সী শিশু আয়েশা ও মোহাম্মদ তুষার নামে দুজন। নিহত অন্যজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
নিহত শিশু আয়েশা বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দা সাজ্জাদ নূর মিঠু ও জুবাইদা ফেরদৌস ইসরার সন্তান। তারা অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। দুর্ঘটনার পর শিশু আয়েশাকে কোলে নিয়ে তার বাবা সাজ্জাদের আহাজারির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন। তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনায় মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৫ জন চমেকে চিকিৎসাধীন বলে আমরা জানতে পেরেছি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় সেতুর ওপর একটি গাড়ি নষ্ট হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। ঠিক তখনই কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি সেতুর দিকে এগিয়ে আসে। নিয়ম অনুযায়ী, লাইনম্যানের সংকেত নিয়ে ট্রেন সেতুতে ওঠার কথা থাকলেও চালক তা মানেননি।
ফলে সেতুর ওপর থাকা অটোরিকশা, একটি মাইক্রোবাস ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধারে এগিয়ে আসে। রাত পৌনে ১১টার দিকে কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের কয়েকটি ইউনিট, রেলওয়ে ও থানা পুলিশ যৌথভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।
জানআলী হাট স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি কক্সবাজার থেকে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ছেড়ে আসে। রাত ১০টা ১০ মিনিটে এটি কালুরঘাট রেলসেতুর অদূরে পৌঁছায়। ওই সময় সেতুর ওপরে একটি সিএনজি অটোরিকশা নষ্ট হয়ে গেলে যানজট তৈরি হয়। আমরা তখনই লাল সিগন্যাল দিই। গার্ডও হাতে লাল পতাকা নিয়ে সিগন্যাল দেন। কিন্তু চালক সিগন্যাল মানেননি।
স্টেশন মাস্টার আরও বলেন, কালুরঘাট ব্রিজটি ডেড স্টেপেজ হিসেবে চিহ্নিত। এখানে ট্রেন থামিয়ে ধীরে ব্রিজে ওঠার নিয়ম। চালক সেটি অমান্য করেছেন বলেই এই দুর্ঘটনা।
গার্ড মো. মাহবুব বলেন, আমি সিগন্যাল অমান্য হওয়ার সম্ভাবনা বুঝতে পেরে নিজেই সেতুর মুখে গিয়ে ট্রেন থামাতে লাল পতাকা নাড়িয়ে সংকেত দিই। কিন্তু ট্রেন চালক সেটি উপেক্ষা করেন। তিনি সংকেত খেয়াল করলে আজ এই দুর্ঘটনা ঘটতো না।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ