নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রবাসী মোহাম্মদ শওকত ছুটি শেষে ফিরে যান নিজের কর্মস্থল দুবাইতে। টিকিট কাটেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। তবে দেশের ইমিগ্রেশন পার করে দুবাই পৌঁছেলেও আটকে যান দুবাই এয়ারপোর্টে। এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয় ভিসা বাতিল হওয়ায় দুবাইতে প্রবেশ করতে পারবেন না শওকত। তবে ভিসা বাতিলের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না শওকত। এক প্রকার বাধ্য হয়েই দেশে ফিরে আসেন তিনি।
দুবাই থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম আসার কথা থাকলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট তাকে নিয়ে যান ঢাকায়। সেখানে ১০ ঘন্টা অপেক্ষার পর একই এয়ারলাইন্সের অন্য একটি ফ্লাইটে চট্টগ্রাম পৌঁছান তিনি। তবে দেশে ফিরেও যেন শান্তি নেই শওকতের, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসতেই তার কাছ থেকে কেটে নেওয়া হয় অতিরিক্ত ১০ হাজর টাকা।
এতেও যেন ক্ষান্ত হননি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। এতো দুর্ভোগ, হয়রানির পর দেশে ফিরতেই চট্টগ্রাম এয়ারপোর্টে কেড়ে নেওয়া হয় শওকতের পাসপোর্টসহ প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র। এ সময় ধরিয়ে দেওয়া হয় ২ লাখ ৬৬ হাজার ১৬৩ টাকার একটি জরিমানার কাগজ।
এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ জানান, জরিমানা পরিশোধ করার পর পাসপোর্ট ফেরত পাবেন শওকত। হতভম্ব শওকত জানতে চান কি অপরাধ তার, কেনই বা তাকে দিতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা!
শওকতের প্রশ্নের জবাবে কর্তৃপক্ষ বলেন, এই জরিমানা দেশের নয়, দুবাই এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ তা করেছে। তারা আরও বলেন, এটাই নাকি দুবাইয়ের নিয়ম। কেউ দুবাই এয়ারপোর্টে নেমে কোন কারণে দুবাই প্রবেশ করতে না পারলে তাকে গুনতে হয় এমন মোটা অঙ্কের জরিমানা।
তবে খবর নিয়ে জানা যায়, মূলত এই জরিমানা কোন ব্যক্তিকে নয়, করা হয় সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষকে। কারণ হিসেবে উল্লেখ আছে, কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ যাচাই বাচাই না করে কোনো ব্যক্তিকে দুবাই পাঠাবে?
কিন্তু অদ্ভুদ ব্যাপার এয়ারপোর্টের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল চাপিয়ে দেন সাধারণ যাত্রীদের ঘাড়ে। ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে শওকতের বেলায়ও। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষও নিজের ভুল চাপিয়ে দেন শওকতের ঘাড়ে। যে জরিমানার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের, তা শওকতের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে আদায় করতে চান। এর জন্য আটকে রাখা হয় শওকতের পাসপোর্ট!
এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা! শুধু শওকত নয়, দেশে শওকতের মতো অনেকেই আছেন যারা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের অবহেলায় এমন হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিমান বাংলদেশ এয়ারলাইন্সের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক আল মামুন ফারুকের সাথে কথা হলে তিনি চাটগাঁ নিউজকে বলেন, মূলত এই জরিমানার টাকা চুকাতে হয় যে এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট কেটেছেন ওই এজেন্সিকে। তবে শওকত যেহেতু নিজের টিকিট নিজেই কেটেছেন সে ক্ষেত্রে এই জরিমানার টাকা তাকেই পরিশোধ করতে হবে। এটাই এয়ারলাইন্সের নিয়ম।
খবর নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট দুবাই আপ-ডাউন করলেও শুধুমাত্র বিমান বাংলদেশ এয়ারলাইন্সের উপরই এমন জরিমানা করা হয়।
কেন যাত্রীকেই জরিমানা গুনতে হবে তা জানতে জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বোসরা ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আগে ভালোভাবে জেনে নেই, তারপর যথাযথ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
চাটগাঁ নিউজ/এইচএস/এসএ