নিজস্ব প্রতিবেদক: কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধির অব্যাহত থাকায় এবং পরবর্তী অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আজ রাত ১০টায় স্পিলওয়ের ১৬টি গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হবে যা প্রতি সেকেন্ডে ৯০০০ কিউসেক পানি নিষ্কাশন করবে।পরবর্তীতে পরিস্থিতি বিবেচনায় গেট খোলার পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে।
বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ৩২০০০কিউসেক পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে।।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের জানান, শনিবার ২টা পর্যন্ত কাপ্তাই লেকের পানির পরিমাপ ১০৭ দশমিক ৬৩ ফুট পর্যন্ত উঠেছে। সন্ধ্যা নাগাদ যদি পানি ১০৮ ফুটের কাছাকাছি বা বেড়ে যায় তাহলে কাপ্তাই স্পিল ওয়ের ১৬টি গেটের ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হবে।সবাইকে সাবধানে থাকার অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, আজকের মধ্যেই পানি ছাড়া হবে কিনা এখনো এমন কোন সিদ্ধান্ত আমরা নিইনি। আর পানি ছাড়ার প্রক্রিয়াও স্বাভাবিক ভাবেই করা হবে ১৬ টি গেইট দিয়ে ৬ ইঞ্চি করে পানি ছাড়া হবে। এতে আতংকিত হবার কোন কারণ নেই। এমনকি প্লাবন হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই। বিশেষ করে বন্যা কবলিত এলাকা ফটিকছড়ি, হাটহাজারী এবং ফেনীতে এর কোন প্রভাব পড়বে না। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
লেকে পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট (মীনস সী লেবেল) যেখানে ১০৮ ফুটকে বিপদসীমা ধরা হয় এবং এই পরিমাপে পৌঁছালে ছাড়া হতে পারে কাপ্তাই লেকের পানি। ১০৮ ফুট লেবেলে পানি পৌঁছে গেলে বাঁধ কর্তৃপক্ষ পানি ছাড়ার বিষয়ে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
কাপ্তাই প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার লেকের পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটির পর্যটনশিল্পের আইকনখ্যাত ঝুলন্ত সেতু। সেতুর পাটাতনের ওপর পানি উঠেছে ৫ থেকে ৬ ইঞ্চি। পানির চাপে অনেক স্থানে খুলে গেছে পাটাতনের কাঠ। সে কারণে সেতুর ওপর দিয়ে পর্যটক চলাচল নিষিদ্ধ করেছে পর্যটন কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে লেকে রুলকার্ভ অনুযায়ী প্রয়োজনের চেয়ে পানি বেশি আছে। এ কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে সর্বোচ্চ ২১৯ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। যদিওবা পাঁচ ইউনিট থেকে সর্বোচ্চ ২৩০ থেকে ২৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা বা বিপৎসীমার কাছাকাছি এসে পৌঁছেছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি আছে ১০৭.৬৩ এমএসএল (মিন সি লেভেল)। যেখানে সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
গত ২ দিন কাপ্তাই লেক এবং লেকের আশেপাশে উপজেলাগুলেতে বৃষ্টিপাত না হলেও এর আগে টানা ৪ দিনের ভারি বৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে ঘন্টায় ঘন্টায় পানি বাড়ছে। ফলে বিপদসীমার কাছাকাছি পানির লেভেল এসে পৌঁছেছে। সর্বশেষ তথ্যমতে আজ দুপুর ২ টা পর্যন্ত বাঁধের পানি ছিলো ১০৭.৬৩ ফুট মীন সি লেভেল।
চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস