নিজস্ব প্রতিবেদক: কনের প্রেমিক আছে শুনে হুলুস্থুল এক কাণ্ড বাঁধালেন বাঁশখালীর এক যুবক। ভেঙে দিলেন বিয়ে, ১৮ ঘন্টা আটকে রাখলেন কনের কথিত প্রেমিককে। বিয়ে ভাঙার খবরে বিষপান করলেন কনে।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কালীপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের পালেগ্রাম এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। রাকীব (১৯) নামের সেই প্রেমিককে আটকে রেখে ফিল্মি স্টাইলে বিয়ে ভাঙার খবরে এলাকায় তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য।
এদিকে, বিয়ে ভাঙার খবরে বিয়ের প্রস্তুতি নেয়া সেই কনে করলেন বিষপান। অন্যদিকে ঘরে আটকে রাখার প্রায় ১৮ ঘন্টা পর আজ রোববার বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার কালীপুর ইউপির ৪নং ওয়ার্ডের পালেগ্রাম এলাকার জাকের আহমদের বাড়িতে আটকে রাখা সেই প্রেমিককে উদ্ধার করছে পুলিশ।
পুলিশ যাওয়ার খবর পেয়ে বর আজিজের পরিবারের লোকজন রাকিবকে তাদের ঘর থেকে বের করে পার্শ্ববর্তী মসজিদ সংলগ্ন ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় ঢুকিয়ে রাখে বলে জানা গেছে। পুলিশ সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীপুর ৪নং ওয়ার্ড পশ্চিম পালেগ্রাম এলাকার জাকের আহমদের পুত্র প্রবাসী মো. আজিজুর রহমানের সাথে বাহারচড়া ইউনিয়নের ইলশা গ্রাম ৪নং ওয়ার্ড এলাকার নুরুল আলমের মেয়ের বিয়ে সামাজিকভাবে পাকাপোক্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে কনে আরিফা এবং বর আজিজের বিয়ে সম্পন্ন করতে পুরোদমে চলছিল উভয়পক্ষের আনুষ্ঠানিকতা।
এমন সময়ে গতকাল শনিবার রাতে কনের বাড়ির পাশের এলাকার নুরুল আলমের ছেলে মো. রাকিব নামে এক কিশোরের সাথে কনে আরিফার প্রেমের সম্পর্ক আছে এই অযুহাতে বর আজিজের ঘরে আটকে রাখা হয় রাকিব নামের ওই যুবককে।
একপর্যায়ে বিয়ে ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন বরের পিতা জাকের আহমদ ও তার পরিবারের লোকজন। তবে বিয়ে ভাঙার খবর শুনে রবিবার দুপুরে আত্মহত্যার চেষ্টায় বিষপান করে কনে আরিফা। বর্তমানে আরিফা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে কনের পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বরের পিতা আজিজের বাবা জাকের আহমদ বলেন, আমার ছেলের সাথে আরিফার বিয়ে সম্পন্ন করতে পুরোদমে আনুষ্ঠানিকতা চলছিল। কিন্তু মেহেদী অনুষ্ঠানের রাতে রাকিব নামে এক ছেলে এসে আরিফার সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে বলে কিছু ভিডিও ও ছবি দেখায়, যার কারণে আমরা তাকে আটকে রেখেছি। সেইসাথে সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিয়ে ভেঙে দেয়ার।
তিনি বলেন, বিয়ের আয়োজনে আমার অন্তত ৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বিষয়টি সমাধান করতে কনের পক্ষকে খবর দিয়েছি। কিন্তু তারা আসে নাই। বিয়ে উপলক্ষে খরচ হওয়া টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন জাকের আহমদ ও তার পরিবার।
অপরদিকে কনের মা বলেন, এতো কিছুর আয়োজন করেছি, এরই মধ্যে রাকিব নামে এক বখাটের সাথে আমার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে বলে ছেলের পক্ষের লোকজন বিয়ে ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই খবর শুনে আমার মেয়ে বিষপান করেছে।
বিষয়টি জানতে চাইলে বাহারচড়া পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই মজনু বলেন, রাকিব নামে এক ছেলেকে বিয়ে বাড়িতে আটকে রাখার খবর পেয়ে রামদাস মুন্সি হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই শাখাওয়াতের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে রাকিবকে উদ্ধার করে রামদাস মুন্সি হাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে আসি। এ বিষয়ে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিব।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ/এসএ