কর্মবিরতিতে প্রাথমিকের প্রায় পৌনে ৪ লাখ শিক্ষক

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: বেতন গ্রেড নিয়ে অসন্তোষের জেরে কর্মবিরতিতে নেমেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় পৌনে ৪ লাখ শিক্ষক। সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন এবং প্রধান শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে এই কর্মসূচি পালন হচ্ছে।

সোমবার (৫ মে) থেকে আগামী ১৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন তারা। ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’ এর ডাকে দেশজুড়ে এই কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।

সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, তাদের এই দাবি পূরণ না হলে পরবর্তীতে কর্মবিরতির সময়সীমা আরও বাড়ানো হবে। ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত দুই ঘণ্টা এবং ২১ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা। এরপরও যদি দাবি আদায় না হয়, তবে ২৬ মে থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পান। তারা দীর্ঘদিন ধরে ১০ম গ্রেডের দাবি জানিয়ে এলেও, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অন্তত শুরুতে ১১তম গ্রেডে বেতন চান।

এ ছাড়া চাকরিতে ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির মতো দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষকরা।

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের এক শীর্ষ নেতা জানান, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় আমরা কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হয়েছি। সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আজ সকাল থেকেই শিক্ষকরা তাদের কর্মবিরতি পালন করছেন।

প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের অন্যতম নেতা মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, সরকার আমাদের দাবি মানেনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আজ থেকে এক ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করেছি। সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে সকাল থেকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

তবে সরকার গঠিত পরামর্শক কমিটি সহকারী শিক্ষকদের জন্য শুরুতে ১২তম গ্রেড এবং নির্দিষ্ট সময় পর ১১তম গ্রেডের সুপারিশ করেছে। তবে শিক্ষকরা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের শুরুতে ১২তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং চার বছর পর তারা ১১তম গ্রেডে পদোন্নতি পাবেন। মন্ত্রণালয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, বর্তমানে সারাদেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় চার লাখ শিক্ষক কর্মরত আছেন। প্রধান শিক্ষকরা বর্তমানে ১১তম গ্রেডে বেতন পান। উচ্চ আদালতের রায়ে সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সহকারী শিক্ষকরাও তাদের বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।

চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ

Scroll to Top