কর্ণফুলী গ্যাসে পৌনে ৩ কোটি টাকা আত্মসাত, ৬ কর্মকর্তাকে দুদকে তলব

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ওয়ার্কার পার্টিসিপেশন প্রফিট ফান্ড (বিপিপিএফ), ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ (এফডিআর) ও সুদের অন্তত ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তাকে ১৬ জুলাই (বুধবার) দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য তলব করা হয়েছে।

গত ৯ জুলাই দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক মো. এমরান হোসেন স্বাক্ষরিত এক নোটিশে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদান এবং অনুসন্ধানকার্যে সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়। চিঠিটি প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে।

তলব করা ৬ ব্যক্তি হলেন- কেজিডিসিএল-এর সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ও বিপিপিএফ ট্রাস্টির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোজাহার আলী, যিনি বর্তমানে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের কোম্পানি সচিব হিসেবে কর্মরত। এছাড়া রয়েছেন কেজিডিসিএল-এর মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) এবং ট্রাস্টির সদস্য সচিব মোহাম্মদ খায়রুল হাসান, ট্রাস্টির সদস্য মো. আসলাম (অবসরপ্রাপ্ত), মুহাম্মদ আবু জাবের খতিব (অবসরপ্রাপ্ত), এম. মকসুদুর রহমান চৌধুরী (অবসরপ্রাপ্ত) এবং মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এদের মধ্যে মহিউদ্দিন প্রতিষ্ঠানটির সিবিএ সেক্রেটারি।

চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে কেজিডিসিএল-এর প্রশাসন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) কবির উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘দুদকের কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। যা পাওয়ার পরপরই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যারা অবসরে গেছেন, তাদেরও চিঠি পাঠানো হয়েছে।’

দুদকের প্রেরিত নোটিশে সাতটি বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট ও টিআইএন নম্বরের বিবরণ, ২০২১-২২ অর্থবছরে লভ্যাংশের বিপরীতে বিপিপিএফ খাতে ন্যস্ত ৮৬ কোটি ২৯ লাখ ৪৩ হাজার ১৪১ টাকার খাতভিত্তিক বিবরণ, কল্যাণ তহবিলের অবন্টনকৃত অর্থ এবং অর্জিত সুদের অর্থ কোন খাতে ব্যয় করা হয়েছে, তার রেকর্ড এবং এক্ষেত্রে বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুসরণ করা হয়েছে কিনা, সেই ব্যাখ্যা। এছাড়া অবন্টনকৃত অর্থ এবং সুদ কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টন না করে কথিত বিভিন্ন খাতে খরচ দেখিয়ে আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থনে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্রসহ ব্যাখ্যা দিতেও বলা হয়েছে।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, গেল বছর কেজিডিসিএল-এ অভিযান চালায় দুদক। অনুসন্ধানে ২০২১-২২ অর্থবছরের বিপিপিএফ, এফডিআর এবং সুদের অন্তত ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া যায়। অভিযোগ রয়েছে, নিট মুনাফার শতকরা ২০ শতাংশ অর্থ থেকে প্রতি বছর কোম্পানির অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রোগ্রামের নামে ব্যয় দেখানো হলেও এসব ব্যয়ের কোনো বিল-ভাউচার পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পরই দুদক বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, অনুসন্ধানে যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে অনিয়মের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের সকলকেই তলব করা হবে। যাদের তলব করা হয়েছে, তারা সকলেই ট্রাস্টি বোর্ডের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top