নিজস্ব প্রতিবেদক : বৃষ্টির অভাবে কাপ্তাই লেকে পানি কমে যাওয়ায় বাঁধের পানি ছাড়া হচ্ছে কম। ফলে কমে যাচ্ছে নদীর পানিও। এতে উজানে চলে আসছে সাগরের লবণাক্ত পানি। চট্টগ্রাম ওয়াসা এসব পানি ফিল্টার করে সরবরাহ করলেও লবণাক্ততা পুরোপুরি দুর করতে পারছে না। এ নিয়ে নগরবাসীর ক্ষোভ বাড়ছে।
অনেকদিন ধরে পানির জন্য হাহাকার চলছে নগরীর অধিকাংশ এলাকায়। পানি সংকট নিয়ে জনঅভিযোগ ও তাৎক্ষণিক সমাধানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম ওয়াসা ৪টি স্পটে রীতিমত কন্ট্রোলরুম খুলে বসেছে। একে তো পানি সংকট, তারওপর লবণাক্ত পানি- এমন সমালোচনায় সংস্থাটির এখন ‘বালিতে মুখ লুকানো’ অবস্থা।
তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে ওয়াসার সরবরাহকৃত পানিতে লবণের উপস্থিতি খোদ ওয়াসা নিজেও স্বীকার করেছে। ওয়াসা জানিয়েছে, ওয়াসার সংগৃহিত পানির পয়েন্টগুলোতে লবণের আধিক্য বেড়েছে। বর্তমানে হালদার পানিতে প্রতি লিটারে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণাক্ততা দেখা যাচ্ছে। অথচ সহনীয় পর্যায় ২৫০ মিলিগ্রাম।
আরও জানা গেছে, লবণাক্ততার কারণে সংস্থাটির চারটি শোধনাগারে স্বাভাবিক উৎপাদনের চেয়ে প্রায় ছয় কোটি লিটার পানি কম উৎপাদিত হচ্ছে।
এমন অবস্থায় নগরী আগ্রাবাদ, হালিশহর, লালখানবাজার, আকবরশাহ, বড়পোল, আন্দরকিল্লা, কোতোয়ালি, চান্দগাঁও, শুলকবহরসহ ২৫টিরও বেশি এলাকার মানুষ পানির অভাবে রয়েছে। রমজান মাসে পানির সংকটে ওয়াসাকে দুষছে গ্রাহকেরা। তবে এই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্থাটি।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, পানির চাহিদা পূরণ ও নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিতে চট্টগ্রাম ওয়াসার পক্ষ থেকে ৪টি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। এ নিয়ে ওয়াসার পক্ষ থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে। পানির সংকটে থাকা গ্রাহকেরা কন্ট্রোলরুমে যোগাযোগের মাধ্যমে পানি পাবেন-এমন আশ্বাস ওয়াসার। ওয়াসার চালুকৃত কন্ট্রোলরুমগুলো হল- মড (১) আগ্রাবাদ কার্যালয় ফোন- ০২৩৩৪৪১৯৯০০, মড (২) মেহেদীবাগ কার্যালয় ফোন-০২৩৩৩৩৬৭৯৭৩, মড (৩) কালুরঘাট কার্যালয় ফোন-০২৪১৩৮৮০০৬, মড (৪) জুবলী রোড কার্যালয় ফোন-০২৩৩৩৩৫৬৭৬৮।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, নদীতে এখন মিঠা পানি নামছে কম। জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি কর্ণফুলীর উজানে চলে আসে। নদীর এ পানিতে লবণ রয়েছে। ফিল্টার করা হলেও এ পানিতে লবণ থেকে যাচ্ছে। তাই আমরা জোয়ারের সময় নদী থেকে পানি তোলা বন্ধ রাখছি।
নগরীর পানির চাহিদা নিশ্চিতের বিষয়ে তিনি বলেন, পবিত্র রমজানের মহানগরীর পানি সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে এবং গ্রাহকদের অভিযোগ তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য চারটি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে।
তবে রমজানের সময়েও পানিতে লবণ এবং পানির সংকট অব্যাহত থাকায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম। সংগঠনের পক্ষ থেকে বুধবার (৫ মার্চ) এক বিবৃতি দেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে পানি নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা দ্রুত সমাধানের দাবি জানানো হয়।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ