কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেন স্থায়ীভাবে চালু না হলে কঠোর আন্দোলন

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করা স্পেশাল ট্রেনটি স্থায়ীভাবে চালুর দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনরা। যদি এ ট্রেন স্থায়ীভাবে চালু না হয় তাহলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তারা।

স্পেশাল ট্রেনটি স্থায়ীভাবে চলাচলের দাবিতে রবিবার (২৩ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁসিযারী দেয়া হয়। সচেতন নাগরিক সমাজ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

এ সময় বক্তারা বলেন, মঙ্গলবার (২৫ জুন) থেকে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন বন্ধ হলে এ রুটের বাকি দুই আন্তঃনগর ট্রেন কক্সবাজার স্পেশাল ও পর্যটন এক্সপ্রেসের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে। কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন স্থায়ীভাবে চালুর দাবিতে সোমবার (২৪ জুন) চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএমসহ সংশ্লিষ্টদের স্মারকলিপি প্রদান করা হবে। এরপরও যদি স্পেশাল ট্রেন স্থায়ীভাবে চালুর বিষয়টি সিদ্ধান্ত না হয় তাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

কক্সবাজার রুটের স্পেশাল ট্রেনটির চলাচলের মেয়াদ আরও ২০ দিন বাড়িয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত করতে চায় কর্তৃপক্ষ। যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদার কারণে এ ২০ দিন ট্রেন চলাচল বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, পর্যটন এক্সপ্রেস ও কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামে দুইটি ট্রেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার ফলে মানুষ তার গন্তব্যে নিরাপদে ও নির্ভয়ে যাওয়া আসা করছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুবিধা হয়েছে। তবে দুঃখের বিষয়, একটি ট্রেন বহু অনুরোধে বিশেষ ট্রেন হিসেবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার লাইনে চলাচল করছিল। এখন সেটা বন্ধ করার পাঁয়তারা চলছে। এর আগেও একবার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

‘আগামী ২৪ জুন এ ট্রেনটি খুবই খোঁড়া যুক্তিতে বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে, যার ফলে টিকেট বিক্রয় এরই মধ্যে বন্ধ। প্রশাসনের দাবি কক্সবাজারের ট্রেনে মাদক আনা নেওয়া হয়। তাহলে সব ট্রেন বন্ধ করে দেন। চট্টগ্রামে বসবাসরত কমজীবী, সাধারণ নাগরিক, মেডিকেল সেবায় আগত রোগী, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা রেলওয়ের এই সিদ্ধান্তে নির্বাক। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে রেলওয়ে জনগণের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ মাধ্যম ও লাভজনক খাত, যেখানে ৭২ থেকে ১৫০ ঘণ্টা পর্যন্ত হাজার হাজার কিলোমিটার ট্রেন চলাচল হচ্ছে।’

মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মাহফুজুর রহমান বলেন, কক্সবাজার ট্রেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল। সেটা তার মেয়ে শেখ হাসিনা পূরণ করেছে। রেলে কিছু বদমাইশ আছে, যারা এ প্রকল্পকে বন্ধ করে দিতে চায়। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থের জন্য এটা করছে। সাংবাদিকসহ সবাই মিলে রেলওয়ে ভবন গিয়ে স্মারকলিপি দিতে পারে। যদি এ ট্রেন বন্ধ হয় আমরা রেললাইনে গিয়ে বসব।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিম রেজা বলেন, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম ট্রেন। কক্সবাজার রেললাইনের প্রকল্প বেশ ব্যয়বহুল। যদি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন বন্ধ হয়ে যায় তাহলে রেল কর্তৃপক্ষ আয় থেকে বঞ্চিত হবে। আয় না হলে ঋণের সুদ কীভাবে দেবে। এটা একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে সোমবার (২৪ জুন) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

এ সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার এ কে এম সারয়ার কামাল, স্থপতি আশিক ইমরান ও নাগরিক ফোরামের মহাসচিব মো. ইদ্রিস উপস্থিত ছিলেন।

চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস

Scroll to Top