চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : দুইদিনের ভারী বর্ষণে ডুবেছে কক্সবাজার শহর। সৈকত এলাকার হোটেল-রিসোর্ট, কটেজ জোনে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটকেরা।
আজ শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টা পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন হোটেলকক্ষে। জলাবদ্ধতার কারণে তাঁরা কোথাও বের হতে পারছেন না। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল নিশানা উড়িয়ে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে।
এদিকে কক্সবাজারের পাশাপাশি জেলার ৯ উপজেলার অধিকাংশ গ্রাম দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। অতিবৃষ্টি ও ঢলের কারণে পাহাড় ধসে দুই উপজেলায় মারা গেছেন ছয়জন।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা ২০১৫ সালের পর একদিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। এতে পাহাড় ধস এবং বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়ে সতর্ক বার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কক্সবাজার হোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘গত ৫০ বছরে শহরজুড়ে এমন জলাবদ্ধতা দেখেননি কেউ। অপরিকল্পিত সড়ক উন্নয়ন, ঠিকমতো নালা পরিষ্কার না করা এবং শহরের পাহাড় নিধন বন্ধ না হওয়ায় এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।’
কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক সাইফুর রহিম বলেন, পর্যটন শহরের এমন জলাবদ্ধতা কল্পনা করা যায় না। বৃষ্টির পানি নামার কোনো পথই নেই। সড়কের পাশের নালাগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরা। যে কারণে বৃষ্টির পানি সড়কের ওপর জমে আছে। যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকদের চরম দুর্ভোগ যাচ্ছে।
হোটেলমালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বৃষ্টিপাত শুরু হলেও ভারী বর্ষণ শুরু হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। এরপর রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টার ভারী বর্ষণে পুরো শহরের ৮ লাখ মানুষের জীবন অনেকটা থেমে যায়। আজ সকাল ১০টায় আবার ভারী বর্ষণ ও ঝোড়ো হাওয়া শুরু হয়। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আরও কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে শহরের প্রধান সড়ক, কলাতলী সৈকত সড়কসহ অন্তত ৩৫টি উপসড়ক ডুবে যায়। এতে বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল।
এদিকে, জেলার সদর, রামু, উখিয়া, চকরিয়া ও টেকনাফে বন্যার ঝুঁকি বেড়েছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিবিধিদের সূত্রে জানা গেছে, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদী এবং খাল ও ছড়াগুলোতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বলেন, ‘ভারী বর্ষণে উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত পরিবারগুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক ও সিপিপি (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। খোলা রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ