ওয়াসার পানিতে লবণাক্ততা ও রমজানে পানি সংকট, উদ্বেগ ক্যাবের

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কয়েক সপ্তাহ ধরে নগরের বিভিন্ন স্থানে চট্টগ্রাম ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে লবণাক্ততা বেড়েছে। ফলে পানির উৎপাদন কমানো হয়েছে, আর এতে করে পানি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিপুল সংখ্যক নগরবাসী। এ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতারা।

বুধবার (৫ মার্চ) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অতিদ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন ক্যাব নেতৃবৃন্দ।

গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক মো. সেলিম জাহাঙ্গীর, দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, যুব ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ ও যুব ক্যাব মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান, পলিসি ইনফ্লুয়েন্স গ্রুপ চট্টগ্রামের সভাপতি কলামিস্ট মুসা খান, সদস্য সচিব আবু মোশারফ রাসেল ও যুগ্ন সদস্য সচিব সাঈদুর রহমান মিন্টু প্রমুখ।

বিবৃতিতে জানানো হয়, ক্যাব চট্টগ্রাম পবিত্র মাহে রমজানে নিরবিচ্ছন্ন পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আগাম প্রস্তুতির দাবি করে আসলেও কর্তৃপক্ষ সে বিষয়ে কর্ণপাত না করে বিগত সরকারের আমলের ন্যায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সবকিছু স্বাভাবিক আছে বলে প্রতিবেদন দিয়ে বাহবা নিয়েছেন। আর সংকটে পড়েছেন সেবাগ্রহীতারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নগরীর হালদা ও কর্ণফুলী নদীতে প্রতি লিটারে ২ হাজার ৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত লবণাক্ততা দেখা দিয়েছে, আর সহনীয় মাত্রা হলো ২৫০ মিলিগ্রাম। শুষ্ক মৌসুম শুরু হবার সময় থেকে বেশ কয়েক বছর যাবৎ এ সমস্যাটি দেখা দিচ্ছে। লবণাক্ততার কারণে ওয়াসার চারটি প্রকল্পে পানির উৎপাদন ছয় কোটি লিটার পর্যন্ত কমেছে। এ কারণে রমজান মাসে পানি সংকটে পড়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরা। এমনিতেই নগরীর এক চতুর্থাংশ এলাকায় সরবরাহকৃত পানিতে ময়লা ও ঘোলা পানি এবং লাইনে পানি না থাকার মতো নানা সংকটে গ্রাহকরা বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহে চরম দুর্ভোগ পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে রমজানে বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লীদেরকে টিউবওয়েল থেকে পানির জোগান দিতে হচ্ছে।

তারা জানান, এ বছরে বৃষ্টি কম হওয়ায় নদীতে সাগরের পানি ঢুকছে। জোয়ারের পাশাপাশি অমাবস্যা-পূর্ণিমায় এ সমস্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে পর্যাপ্ত পানি না ছাড়ায় জোয়ারের সময় লবণাক্ত পানি ওপরের দিকে উঠে যাচ্ছে। এছাড়াও কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হচ্ছে না। সে সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টিও হচ্ছে না। কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পানি ছাড়া হলে এবং বৃষ্টি হলে লবণাক্ত পানি নদীতে প্রবেশ হতো না। আর এসমস্যা বেশ কয়েক বছর ধরে প্রকট হলেও চট্টগ্রাম ওয়াসা নানা তালবাহনায় কিছুই না করে নানা প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওয়াসার দুর্নীতিবাজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল্লাহ বিতাড়িত হলেও তার দোসররা এখনও বহাল তবিয়তে আছে। যারা নানা কৌশলে বর্তমান সরকারের আর্শিবাদ নিতে নানা ফন্দিফিকির করছেন। সে কারণে ফজলুল্লাহর আমলে সংঘঠিত মহাজালিয়াতির কোন তদন্ত পর্যন্ত হয়নি। ফলে অনিয়মই চট্টগ্রাম ওয়াসার নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন নামে বেনামে প্রকল্প তৈরি করে জনগণের করের টাকায় সরকারি তহবিল আত্মসাৎ সাধারণ রীতিতে পরিণত হয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top