চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ওয়ালটনের বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তি মানববন্ধন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আজ মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও হাই-টেক শিল্পখাতে বিপ্লব ঘটিয়ে দেশকে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ওয়ালটন। ক্রেতা, বিক্রেতা ও শুভানুধ্যায়ীদের ভালোবাসা এবং সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি দেশীয় শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে এবং বাংলাদেশে উৎপাদিত ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য বিশ্ববাজারে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রার যোগান বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ওয়ালটন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্রেডিট রেটিংয়ের সর্বোচ্চ মানদণ্ড ট্রিপল এ রেটেড কোম্পানি ওয়ালটন। প্রতি বছরই সর্বোচ্চ ভ্যাট-ট্যাক্স প্রদানের জন্য ওয়ালটন পুরস্কৃত হয়ে আসছে। সকল ধরনের কমপ্লায়েন্স মেনে পণ্য উৎপাদন, বিপণন, বিক্রয় কার্যক্রম এবং বিক্রয়োত্তর সেবা পরিচালনা করে ওয়ালটন। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির টেস্টিং ইক্যুইপমেন্ট দিয়ে ওয়ালটন উৎপাদিত পণ্যের মান যাচাই করা হয়। বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ড কর্তৃক স্বীকৃত আন্তর্জাতিকমানের টেস্টিং ল্যাব নাসদাত-ইউটিএস থেকে প্রতিটি পণ্যের মান সনদ পাওয়ার পরই তা বাজারজাত করা হয়। ওয়ালটন পণ্যে আইএসও, সিই, সিবি, আরওএইচএস, আরইএসিএইচ, ইএমসি, ইইউ, ইউএসএ ইত্যাদি বৈশ্বিক স্ট্যান্ডার্ড এবং কোয়ালিটি নিশ্চিত করা হয়।
বৈশ্বিক স্ট্যান্ডার্ড বজায় রেখে স্বচ্ছতার সঙ্গে আর্থিক প্রতিবেদন প্রস্তুত এবং করপোরেট গর্ভমেন্স ও কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করায় ওয়ালটন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন পুরস্কার ও সনদ অর্জন করেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সাফা গোল্ড অ্যাওয়ার্ড, আইসিএবি, আইসিএমএবি, আইসিএসবি অ্যাওয়ার্ড ইত্যাদি।
কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় সম্প্রতি ওয়ালটনের বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তি মানববন্ধন করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হচ্ছে, যা ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ওয়ালটন মনে করে, এসব প্রচারণা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দেশীয় শিল্পের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা মাত্র। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে বিদেশি পণ্য আমদানির সুযোগ তৈরি করতে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।
ওয়ালটনের জবাব
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন এবং পরিকল্পিত। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, কিছু ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটর পূর্বে বাকিতে পণ্য নিয়ে বিক্রির পর পাওনা অর্থ পরিশোধ করেননি। ওয়ালটন থেকে বাকিতে নেওয়া পণ্যের বিক্রির টাকা তারা অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন বা এমন খাতে বিনিয়োগ করেছেন যেখানে প্রত্যাশিত আর্থিক সাফল্য আসেনি। বর্তমানে, তারা নানা টালবাহানা করে ওয়ালটনের বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করছেন, যা মূলত বকেয়া অর্থ পরিশোধ এড়ানোর কৌশল।
ওয়ালটন জানায়, তাদের সাথে ব্যবসা করে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো নজির নেই, বরং হাজার হাজার ডিলার ও ডিস্ট্রিবিউটর দীর্ঘদিন ধরে সফলভাবে তাদের সাথে ব্যবসা করে আসছেন। নতুন ডিলারশিপের জন্য বিপুলসংখ্যক আবেদনও জমা রয়েছে। ওয়ালটন সব সময় ব্যবসায়িক স্বচ্ছতা বজায় রেখে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং ডিলারদের সঙ্গে সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
দেশীয় শিল্পের বিরুদ্ধে অপপ্রচার
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ মনে করে, বাজেট ঘোষণার কয়েক মাস আগে থেকেই কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দেশীয় শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং বিদেশি পণ্যের আমদানির সুযোগ সৃষ্টির জন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। ওয়ালটন জানায়, “প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার আগে এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণা আমরা লক্ষ্য করি, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।”
ওয়ালটন মনে করে, এসব অপপ্রচার কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নয়, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা দেশীয় শিল্পের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
ওয়ালটনের আহ্বান
ওয়ালটন আরও জানায়, যদি কোনো ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটর মনে করেন যে তারা ওয়ালটনের কোনো বিক্রয় প্রতিনিধি কর্তৃক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বা হিসাব বুঝে পাননি তাহলে ওয়ালটনের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে। তারা যেন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে সরাসরি যোগাযোগ করেন, যাতে বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা যায় এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
ওয়ালটন তাদের অগণিত গ্রাহক, শুভানুধ্যায়ী এবং অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে, এসব বিভ্রান্তিকর অপপ্রচারে কান না দেওয়ার জন্য। দেশীয় শিল্প রক্ষায় এবং বাজেট ঘোষণার কয়েক মাস আগে থেকে শুরু হওয়া মিথ্যা প্রচারণা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ওয়ালটন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে ক্রেতা, বিক্রেতা, শুভানুধ্যায়ী এবং নীতিনির্ধারকরা এসব অপতৎপরতার বিষয়ে সচেতন থাকবেন এবং দেশীয় শিল্পের বিকাশে পূর্বের মতো তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ