ঐক্যবদ্ধ থাকলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পোর্ট ইউজার্স ফোরাম সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত ট্যারিফ নিয়ে আন্দোলন করেছে- সেই আন্দোলনের সূচনালগ্নে বন্দর কিন্তু প্রাথমিকভাবে বর্ধিত প্রবেশ ফি স্থগিত করেছে। যদি চট্টগ্রামের সব বিজনেস ফোরাম ঐক্যবদ্ধ থাকে তাহলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব। আমরা সব ব্যবসায়ীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাই।

বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক প্রসারে প্রতিবন্ধক ওজন স্কেল, বন্দর ট্যারিফ ও চিটাগাং চেম্বারকে জবাবদিহিমূলক ও ব্যবসায়ীবান্ধব করার লক্ষ্য এ সভার আয়োজন করা হয়।

আমীর হুমায়ুন বলেন, দীর্ঘদিন পরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চিটাগাং চেম্বারের নির্বাচন হচ্ছে। আমি এই নির্বাচনকে সমর্থন জানিয়ে বলতে চাই- যারাই যোগ্য প্রার্থী তাদের নির্বাচিত করুন। যাতে করে ব্যবসায়ীদের দৈনন্দিন চিহ্নিত সমস্যাগুলো অচিরেই সমাধান হবে। যা গণতান্ত্রিক কোনো নেতৃত্ব না থাকার কারণে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সমাধান হয়নি।

চিটাগাং চেম্বার নির্বাচনে ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী।

বিশেষ অতিথি বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ সভাপতি এমএ ছালাম বলেন, সবদার আলী, হাশেম সাহেবরা খাতুনগঞ্জে ব্যবসা করেছেন। আপনারা নিজেদের মধ্যে দূরত্ব ঠিক করেন, চেম্বার ঠিক হবে, ব্যবসা ঠিক হবে। একবার সুযোগ এসেছে চেম্বারের ভোট দেওয়ার। পরবর্তী ১০০ বছরে আমিরুল হকের মতো ব্যবসায়ী নেতা পাব কিনা আমি সন্দিহান।

ইউনাইটেড বিজনেস ফোরামের টিম লিডার মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, আমি নির্বাচিত হতে পারলে ইনশাআল্লাহ তিন মাসের মধ্যে আপনাদের নিয়ে স্কেলের গোড়ায় যাব। স্কেলের জন্য আপনারা যেমন সাফার করছেন আমারও সিমেন্ট কারখানা চট্টগ্রামে আছে, আমিও সাফার করছি। ঢাকায় আমি ব্যবসা করি, সেখানে নেই। মোংলায় আমার কারখানা আছে সেখানে কোনো সমস্যা নেই। চট্টগ্রাম থেকে অলমোস্ট চলেই যেতে হচ্ছে, আমাদের বের করে দিচ্ছে। এসব ষড়যন্ত্র। আমি নাম ধরে বলছি, যে ওবায়দুল কাদের করেছে আল্লাহ তাকে শাস্তি দিক। তাকে আল্লাহ হেদায়েত করুক।

কালুরঘাট সেতু ও শাহ আমানত সেতুতে আমার টোল দিব কেন। ঢাকা শহরের ১১টি ব্রিজে কোনো টোল নেয় না। সিটি করপোরেশন কর্ণফুলীর দুই পাড়ে ট্যাক্স নিচ্ছে, আমরা টোল দিব না। আপনারা সঙ্গে থাকলে টোল নিতে পারবে না। হাত থাকলে মুখে কথা বলব না। শেষ কথা হাতে বলব।

আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে পোর্ট ইউজার্স ফোরামের সভায় বন্দরের ট্যারিফ নিয়ে বক্তব্য দিলাম। যানবাহন চালক মালিকদের ডেকে নিয়ে বললো গেইট পাসের বর্ধিত ফি স্থগিত করে দিয়েছে। গলা থাকলে গলাবাজি করবেন। হাত থাকলে হাতে কাজ করবেন। দুটোই লাগবে। চট্টগ্রামের সমস্যা নিরসনে আপনারা পাশে থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুস সালাম বলেন, চিটাগাং চেম্বারের অতীত নেতৃত্ব খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেননি। আমরা আশা করব নতুন নেতৃত্ব সুখে-দুঃখে খাতুনগঞ্জের পাশে থাকবে।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক নাসিরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীদের ঐক্য নেই। তাই অসম্মানজনক অবস্থায় আছে। আমিরুল হকের নেতৃত্বে চিটাগাং চেম্বার হলে ব্যবসায়ীদের সমান পুনরুদ্ধারে কাজ করবে।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আবুল বশর চৌধুরী বলেন, চেম্বারে সুষ্ঠু পরিবেশ চায় ব্যবসায়ীরা। ৬০০ বছর ধরে চট্টগ্রামের মানুষ ব্যবসা করে আসছেন। গত আট বছরে অনেক মন্ত্রী, সচিব এসে আশ্বাস দিয়েছেন ওজন স্কেল সমস্যা নিরসন করবেন। আশ্বাসই থেকে গেছে।

চাক্তাই চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনামুল হক বলেন, গত ১৫ বছর চেম্বারের কাছে যাওয়ার সুযোগ পাননি ব্যবসায়ীরা। মহাসড়কে ওজন স্কেলের কারণে চট্টগ্রামের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। বিমাতাসুলভ আচরণ এটা। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে এ ওজন স্কেল উঠে যাবে।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম চট্টগ্রামের সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব বলেন, সব ব্যবসা ঢাকায় চলে গেছে। যখন খাতুনগঞ্জকে মৌলভীবাজার নিয়ে গেছে। সেই থেকে সিন্ডিকেটের জন্ম। খাতুনগঞ্জের মানুষপ্রেমী ব্যবসায়ী, রক্তচোষা নন। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক আট লেন করতে হবে। ঢাকা চট্টগ্রাম রেল যোগাযোগ উন্নত করতে হবে। একটা নির্বাচিত চেম্বার থাকবে। আরেকটা ইউনাইটেড বিজনেস ফোরাম থাকবে। আপনি এমপি মন্ত্রী হলে আপস করবেন না। ব্যবসায়ী নেতারা রাজনীতি করার দরকার নেই।

সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, বিজিএমইএর পরিচালক এমডিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন, আলমগীর পারভেজ, জাহিদুল হাসান, আমজাদ হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ।

দল যার যার- চেম্বার সবার এই স্লোগানে চেম্বার নির্বাচনে ইউনাইটেড বিজনেস ফোরাম থেকে অংশ নেওয়া অর্ডিনারি গ্রুপের প্রার্থীদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন মো. আমজাদ হোসাইন চৌধুরী, মো. নাসির উদ্দিন চৌধুরী, কামাল মোস্তফা চৌধুরী, আমান উল্লা আল ছগির ছুট্ট, আবু হায়দার চৌধুরী, মো. শফিউল আলম, এএসএম ইসমাইল খান, মো. গোলাম সরওয়ার, আসাদ ইফতেখার, মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, মো. হাবিবুর রহমান ও শহিদুল আলম, অ্যাসোসিয়েট গ্রুপের মো. আলাউদ্দিন আল আজাদ, সরোয়ার আলম খান, মো. জাহিদুল হাসান, মো. নুরুল ইসলাম, মো. সেলিম নুর, মো. মশিউল আলম, সাবেক বিজিএমইএ পরিচালক খন্দকার বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

Scroll to Top