এস আলম, জিপিএইচসহ চট্টগ্রামের ৪ শিল্পগ্রুপ চায় খেলাপি ঋণের পুনঃতপশিল

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : এই মুহূর্তে যে কোন নাগরিককে প্রশ্ন করলে দেশের শীর্ষ ঋণ খেলাপি শিল্প গোষ্ঠীর নাম কি? উত্তরে বেশির ভাগই বলবেন এস আলম গ্রুপ। কিন্তু সোমবার (১ ডিসেম্বর) দৈনিক সমকালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের এক তথ্যে উঠে আসে ঋণ তপশিলের শীর্ষ ২০ জনের মধ্যে মাগুরা গ্রুপই সবচেয়ে বেশি ঋণ পুনঃতপশিলের জন্য আবেদন করেছেন।

প্রতিবেদনে আরো উঠে আসে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণের পুনঃতপশিলের আবেদনকারী ২০ ব্যবসায়ীর মধ্যে দেশের আলোচিত সমালোচিত শিল্পগ্রুপ এস আলম, জিপিএইচ ইস্পাত, সা’দ মুছাসহ চট্টগ্রামের ৪ শিল্পগ্রুপও রয়েছে। তবে বার বার আলোচনায় এস আলম থাকলেও খেলাপির শীর্ষে রয়েছে মাগুরা গ্রুপ। এই গ্রুপটি ঋণ খেলাপিতে চ্যাম্পিয়ন হলেও কোনো সময় কোথাও আলোচনায় আসেনি। এমনকি দেশের সিংহভাগ মানুষ এই মাগুরা গ্রুপের নামও শুনেননি।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণ কমাতে চলতি বছরের শুরুতে বিশেষ সুবিধায় ঋণ পুনঃতপশিলের সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আলোকে এক হাজার আবেদনের বিপরীতে দুই লাখ কোটি টাকার মতো ঋণ পুনঃতপশিল চাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দেশের ২০ ব্যবসায়ী এক লাখ ১০ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ নিয়মিত করার আবেদন করেছেন।

তথ্যমতে, ২০ ব্যবসায়ীর মধ্যে খেলাপি ঋণের তালিকায় শীর্ষে থাকা মাগুরা গ্রুপ এককভাবে সর্বোচ্চ ১৪ হাজার ৭৭১ কোটি টাকা পুনঃতপশিল চেয়েছে। আট ব্যাংক ও তিন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তাদের এই ঋণ রয়েছে। এস আলম গ্রুপ পুনঃতপশিল চেয়েছে ১২ হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা। সে হিসেবে মাগুরা গ্রুপের ঋণ এস আলম গ্রুপ থেকে ২ হাজার ৫ কোটি টাকা বেশি।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১ হাজার ১৬৪ কোটি টাকা পুনঃতপশিলের আবেদন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এ ঋণ রয়েছে ২৮ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। ষষ্ঠ অবস্থানে আছে চট্টগ্রামের জিপিএইচ ইস্পাত গ্রুপ। ২৮ ব্যাংকে গ্রুপটির ঋণ রয়েছে ছয় হাজার ৮৯৪ কোটি টাকা। এই ঋণ পুনঃতপশিল চেয়ে আবেদন করেছেন গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিপিএইচ ইস্পাতের কোম্পানি সচিব মো. মোশারফ হোসেন বলেন, তাদের ঋণ খেলাপি হয়েছে তেমন নয়, নিয়মিত আছে। তবে করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিনিময়হারজনিত লোকসানের কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। যে কারণে পুনঃতপশিলের মাধ্যমে ঋণ পরিশোধে এখন বাড়তি সময় চাওয়া হয়েছে।

এদিকে, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের নামে বিপুল অঙ্কের অর্থ নিয়ে আলোচিত সাদ মুসা গ্রুপ। বেনামিসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ৫ হাজার ১০০ কোটি টাকার ঋণ পুনঃতপশিলের আবেদন করেছে তারা। এর মধ্যে নিজ নামে ১৬ ব্যাংক ও ছয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। আর দুই ব্যাংক ও এক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বেনামি ৬০০ কোটি টাকা পুনঃতপশিল চাওয়া হয়েছে। এছাড়া মেজর (অব.) মান্নানের সানম্যান গ্রুপের দুই হাজার ৫৪১ কোটি টাকার ঋণ নিয়মিত করার আবেদন করা হয়েছে।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top