এবার যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা রাউজানে

আতংকের জনপদ নোয়াপাড়া

রাউজান প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাউজানে মো. হাসান (৩২) নামের এক যুবলীগ কর্মীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল দুর্বৃত্ত।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে দায়িত্বরত পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন তালুকদার।

নিহত মো. হাসান রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে আহমেদ হোসেন মেম্বারের বাড়ির মো. বজল আহমেদ ড্রাইভারে ছেলে। তার পৈতৃক বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায় হলেও ছোট থেকে বেড়ে ওঠা তার মামার বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়ায়। তার মামা মৃত আহমেদ হোসেন ছিলেন সাবেক ইউপি সদস্য।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার বিকাল ৪ টার দিকে নিহত মো. হাসান বাড়িতে অবস্থান করাকালে বেশ কয়েকজন দূর্বৃত্ত ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে বেধড়ক মারধর করে পাশ্ববর্তী গ্রাম পলোয়ান পাড়ায় ফেলে রেখে যায়।

পরে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে খোঁজ পেয়ে তার স্ত্রী ঝিনু আক্তারসহ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই বিষয়ে জানতে নিহতের স্ত্রী ঝিনু আক্তারের ব্যবহৃত মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে অপরপ্রান্ত নিহতের শাশুড়ি পরিচয়দানকারী এক নারী বলেন, সন্ত্রাসীরা বিকালে ঘরে ঢুকে খাটের নিচ হতে হাসানকে বের করে মারতে মারতে নিয়ে যায়। এই সময় বাড়িতে মহিলারা থাকায় তাদের কাউকে চিনতে পারেনি।

রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, এই ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। আপনি যেমন তথ্য পেয়েছেন, আমিও তেমন পেয়েছি। আমরা তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত হাসান ছিলেন রাউজান উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সেকান্দরের একান্ত সহযোগী ও তার পেটোয়া বাহিনীর প্রধান। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাধারণ মানুষের উপর তিনি ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীদের মত এলাকা ছেড়ে তিনিও পালিয়ে যান। গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এলাকায় এসে দুর্বৃত্তের পিটুনিতে তিনি খুন হন। কারা এই ঘটনায় জড়িত এই বিষয়ে ভয়ে-আতঙ্কে মুখ খুলছে না এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আসাদ আলী মাতব্বর পাড়ায় জুমার নামাজ আদায় ও বাবা-মায়ের করব জেয়ারত করতে আসার পথে চাকতাইয়ের শুটকি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর প্রকাশ্যে দিবালোকে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন। এই ঘটনার ১০ দিন পর তার ছেলে মো. মাকসুদ বাদী হয়ে ২৫/৩০ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। তবে এই হত্যার রহস্য এখনও উদঘাটিত হয়নি। এই নিয়ে নোয়াপাড়া ইউনিয়নে এক মাসের ব্যবধানে ২টি খুনের ঘটনা ঘটলো।

চাটগাঁ নিউজ/জয়নাল/জেএইচ

Scroll to Top