এক ঘাটের অধিকার পেতে কর্ণফুলীর ১৬ ঘাট বন্ধ রেখে প্রতিবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : কর্ণফুলী নদীর অভয়মিত্র ঘাটের যাত্রী পারাপার, নৌকা-সাম্পান সরবরাহ ও খাস কালেকশনের জন্য ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ড এলাকার দুই বিএনপি নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এই ঘাটের দায়িত্ব বংশ পরম্পরা মাঝিদেরকে না দিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দায়িত্ব দেয়ায় এক ঘাটের বিনিময়ে নদীর ১৬ ঘাটে বৈঠা বর্জন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন।

সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোর ৬টা থেকে কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের অন্তর্ভূক্ত একাধিক সংগঠন এ কর্মসূচি পালন করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২০ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে অভয়মিত্র ঘাটের খাস কালেকশনের জন্য প্রতিষ্ঠানের এস্টেট শাখার বাজার পরিদর্শক দূর্বাদল চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই আদেশে সোমবার থেকে অভয়মিত্র ঘাটে যাত্রী পারাপারে নৌকা, সাম্পান সরবরাহসহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য আবু নাসের সাজ্জাদ ও আব্দুল কাদের ফিরোজ নামে দুইজনকে সাময়িকভাবে নিয়োজিত করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে বৈঠা বর্জন ও অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দেন কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশন।

ইছানগর সদরঘাট সাম্পান মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীতে আমরা বংশ পরম্পরায় সাম্পান চালাচ্ছি। এই ঘাট পরিচালনা করার আমাদের অধিকার। আমরা হাইকোর্ট থেকে রায় এনেছি। আমরা থাকা অবস্থায় এ ঘাটগুলোকে অন্য কারও হাতে পরিচালিত হতে দেব না।’

চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলীউর রহমান বলেন, ‘মাঝিরা তাদের অধিকার চায়। তারা নৌকা চালায়। মাঝিরাও এদেশের নাগরিক, আবার যারা ইজারা দিয়েছেন এবং নিয়েছেন তারাও নাগরিক। কিন্তু তারা নৌকা সংক্রান্ত বিষয়গুলো বুঝবে না। তাই মাঝিদের এ সমস্ত দায়িত্ব দিতে হবে। এটা তাদের ন্যায্য দাবি। চসিকের পক্ষ থেকে যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তারা পেশাদার মাঝি নন। তারা ব্যবসা ছাড়া ঘাট, নদী সম্পর্কে কিছু বুঝবেন না। নদী, নৌকা, ঘাট যারা বুঝেন তাদেরকে দায়িত্ব দেয়া উচিত।

তবে ঘাট নিয়ে উচ্চ আদালতের রায়, মাঝিদের মানবিক অধিকারকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চসিক কেন এই ঘাটের ইজারা অপেশাদার বিএনপি নেতার হাতে অর্পন করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শোনা গেছে, প্রভাব খাটিয়ে ও চসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই এস্টেট শাখার বাজার পরিদর্শক দুর্বাদল চৌধুরীর সাথে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কথিত বিএনপি নেতা আবু নাসের সাজ্জাদ ও আবদুল কাদের অভয়মিত্র ঘাটে দায়িত্ব পায়। তবে অফিসিয়াল আদেশে এই দায়িত্ব ‘সাময়িক’ বলে উল্লেখ রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপ-সচিব) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও রাজস্ব কর্মকর্তা সাব্বির রহমান সানির মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

চাটগাঁ নিউজ/উজ্জ্বল/এসএ

Scroll to Top