চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: ঋণের নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবিএল) থেকে দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) চিঠি পাঠিয়েছে ব্যাংকটির নতুন পরিচালনা পর্ষদ।
আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুদকের একটি নির্ভরশীল সূত্র এমন তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রটি জানায়, দুদক বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান করবে। অনুসন্ধানে তাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে ব্যাংক।
সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে অঢেল সম্পত্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয়ের পাশাপাশি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ২০১৮ সালে সাইফুজ্জামান চৌধুরী ব্যাংকটির পূর্ববর্তী বোর্ড সদস্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন এবং নিজ পরিবার ও সহযোগীদের ইউসিবি বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করেন। স্ত্রী রুখমিলা জামানকে চেয়ারম্যান এবং ভাই আনিসুজ্জামানকে নির্বাহী কমিটির প্রধান নিযুক্ত করেন সাইফুজ্জামান।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পালিয়ে যান সাইফুজ্জামানসহ তার পরিবার। দায়িত্ব নেয় নতুন পরিচালক পর্ষদ। এমন পরিস্থিতিতে গত পরিচালকদের অনিয়মের অনুসন্ধান করে নতুন পর্ষদ, যা লিখিতভাবে জানানো হয় দুদককে।
এতে বলা হয়, অর্থ লুট করতে অসঙ্গতি থাকা স্বত্বেও হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করে সাইফুজ্জামানের বোর্ড। নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট জেনেক্স ইনফোসিস, জেনেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার, এ অ্যান্ড পি ভেঞ্চার এবং এডব্লিউআর রিয়েল এস্টেটের নামে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করা হয়।
ব্যবস্থাপনা পর্যায়ের সুপারিশ ছাড়াই নীতিমালা লঙ্ঘন করে এই ঋণগুলো অনুমোদিত হয়, যা দ্রুত সময়ের মধ্যেই খেলাপিতে রূপ নিবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
আনিসুজ্জামান, বশির আহমেদসহ অন্যান্য বোর্ড সদস্যদের অনুমোদনে ২০২১ সালে জেনেক্স ইনফোসিসের ৬০,৮৩,৬২৬ ‘লকড-ইন’ শেয়ার ক্রয় করে ইউসিবি। প্রতিটি ১৭২ দশমিক পাঁচ শূন্য টাকা দরে মোট ১০৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার ক্রয় করা হয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ শেয়ারগুলোর বাজার মূল্য কমে ৩৭ টাকা নয় শূন্য পয়সায় নেমে আসে, ফলে প্রায় ৭৮ কোটি ২৫ লাখ টাকার ক্ষতির মুখে পরে ইউসিবি।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি/এসএ