চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এই প্রকল্পগুলোর আওতায় নগরীর ৫৭টি খাল খনন ও সংস্কার করা হচ্ছে। প্রকল্পগুলো শেষ হলে উদ্ধার হওয়া খালগুলো রক্ষার জন্য নৌকা চালানোর পরিকল্পনা করছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে রাজাখালী খাল-২ থেকে কল্পলোক আবাসিক এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ আশার কথা জানান তিনি।
মেয়র বলেন, “প্রকল্প শেষ হলে খালগুলো রক্ষা করা হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য প্রকল্প শেষ হলে খালগুলোতে বিনোদনের ক্ষেত্র তৈরির জন্য বারইপাড়া খালসহ উদ্ধার হওয়া সব খালে নৌকা ও স্পিডবোট চালু করা হবে। খালে যখন মানুষ ময়লা দেখবে না বরং স্বচ্ছ জলপ্রবাহে বিনোদনের উৎস খুঁজে পাবে তখন মানুষ আর খালে ময়লা ফেলবে না।”
এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে এবং যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও রুটিন ওয়ার্ক পরিচালনা করলে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা কমবে। পাশাপাশি, এ প্রকল্পগুলোর আওতায় খালপাড়ে নির্মিত সড়ক ও কালভার্টের কারণে নগরের যোগাযোগ সক্ষমতা বাড়বে।
প্রকল্পগুলোর সুফল পেতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, “আমরা প্রকল্প এলাকাগুলোতে ময়লার ভাগাড়ও নির্মাণ করব। যাতে খালপাড়ের মানুষ বর্জ্য ফেলে খাল ময়লা দিয়ে ভরিয়ে না ফেলে। প্রকল্প এলাকায় উদ্ধার হওয়া খালসংলগ্ন ভূমি রক্ষায় সীমানা নির্ধারণী খুঁটি বসানো হবে। কারণ এ খালগুলো রক্ষার সঙ্গে কর্ণফুলী এবং চট্টগ্রামের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িত।”
চট্টগ্রামের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ভারী বর্ষণ, ঢল আর জোয়ারে নগরে পানিপ্রবাহ বেড়ে যায়। বৈশ্বিক জলবায়ুগত পরিবর্তনে আগামী কয়েক দশকে ভাটির দেশগুলোতে এ প্রবণতা আরো বাড়বে। আমাদের লক্ষ্য এই পানি যাতে জমে দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা তৈরি করতে না পারে সেজন্য যতদ্রুত সম্ভব পানি নগর থেকে সমুদ্রপথে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় বাকলিয়া এলাকার প্রায় ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সংযুক্ত ৩০-৩২ ফুট প্রস্থের রাজাখালী-১, রাজাখালী-২ এবং রাজাখালী-৩ খাল তিনটির খনন কাজের পাশাপাশি দুই পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল, রেলিং নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া খাল দখল ঠেকাতে দুই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে সড়কও। খালে এত বেশি পলিথিন ছিল যে অনেক স্থানে ৪ মিটার পর্যন্ত মাটি তুলে ফেলতে হয়েছে। এরপর বালু ফেলে ভরাট করে বিটুমিনের পরিবর্তে আরসিসি রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে সড়কগুলো দীর্ঘমেয়াদে খালের পানিতেও নষ্ট না হয়।
এই প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে মেয়র বলেন, “প্রকল্পের কাজের গতি সন্তোষজনক। আমরা আশা করি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।”