উখিয়ায় বলির ছলে জুয়ার আয়োজনের চেষ্টা, আতঙ্কে স্থানীয়রা

উখিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়ায় বলি খেলার আড়ালে একটি চক্র জুয়া খেলাকে বৈধতা দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। তারা রোহিঙ্গাদের কাঁটাতারের নিরাপত্তা বেষ্টনী অতিক্রম করে বলি খেলা প্রদর্শনে আকৃষ্ট করতে চায়, যা আইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার চরম লঙ্ঘন।

এ ধরনের কর্মকাণ্ড স্থানীয়দের মধ্যে চুরি, ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি করেছে। বিষয়টি অতি দ্রুত প্রতিহত করা না হলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি ঘটতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

জানা গেছে, উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের রোহিঙ্গা শিবির সংলগ্ন মধুরছড়া এলাকায় বকতার বলির নামে একটি বলি খেলার আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আয়োজকেরা ১৮ মে থেকে এই খেলা শুরু করতে চান। তবে এলাকাবাসীর মধ্যে এ নিয়ে উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই খেলার অনুমতি কে দিয়েছে সেটি বলতে নারাজ বকতার৷

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন মধুরছড়া এলাকায় একটি বলি খেলার আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷ আয়োজকরা ইতোমধ্যে জুয়া খেলার উদ্দেশ্যে একটি চক্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ওই চক্রটি রোহিঙ্গাদেরও এই খেলায় সম্পৃক্ত করতে চায়।

মধুরছড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, আয়োজকরা বলি খেলার নামে অনুমতি নিলেও প্রকৃতপক্ষে এটি একটি জুয়া খেলার আড়াল মাত্র। তাঁর মতে, এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য বিনোদনের আড়ালে জুয়া খেলা পরিচালনা করা, যা এলাকায় অনৈতিক কার্যকলাপকে উৎসাহিত করতে পারে। আয়োজনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের অধিকাংশই আগে থেকেই জুয়া খেলার সাথে জড়িত, ফলে এটি নিছক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নয়, বরং পরিকল্পিতভাবে জুয়া পরিচালনার একটি মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতে যাচ্ছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ বিরাজ করছে এবং তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনার আহ্বান জানান।

ফলিয়াপাড়া এলাকার শামসু বলি জানান, এই বলি খেলা মূলত গফুর কোম্পানি ও বকতার বলিসহ আরও কয়েকজন মিলেমিশে করতেছে৷ এখানে আমি তাদের সহযোগিতা করছি তবে আমি সম্পৃক্ত নয়৷

এবিষয়ে বলি খেলার অনুমতি নেওয়া বকতার বলির সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি৷

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হক জানান, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় বলি খেলার নামে জুয়ার আয়োজনের পাশাপাশি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর ফলে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, একটি মহল ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্টের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তাই এটি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি৷

রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান চৌধুরী জানান, বৈশাখী খেলা বা বলি খেলা হোক আমরা চাই তবে এর আড়ালে জুয়া খেলা চালানোর চেষ্টা উদ্বেগজনক। এই ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডে এলাকার আইনশৃঙ্খলার জন্য এক বিরাট হুমকি হতে পারে। ক্যাম্প কাঁটাতারের নিরাপত্তা বেষ্টনী অতিক্রম করে রোহিঙ্গারা বলি খেলা প্রদর্শনের মাধ্যমে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে এই ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

উখিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফ হোসেইনের জানান, এবিষয়ে থানা পুলিশ অবগত নই৷ এগুলো করা করতেছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

চাটগাঁ নিউজ/ইব্রাহীম/এমকেএন

Scroll to Top