উখিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়ায় সংরক্ষিত বনের পাহাড় কেটে মাটি পাচারকারী চক্রের ডাম্প ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে বিট কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করেছে বন বিভাগ। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (৩১ মার্চ) মধ্যরাত ১২ টার পর বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন বলে জানান উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন বলেন, রবিবার রাতে বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের এক কর্মকর্তা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ১৫ জনকে আসামি করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে।ঘটনার পর থেকে পুলিশ জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। একপর্যায়ে সোমবার ভোরে রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি ছৈয়দ করিমকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানান ওসি।
এর আগে রোববার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি পাচার করার খবর পেয়ে বন বিভাগের দোছড়ি বিটের কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদুজ্জামান (৩০) কয়েকজন বন কর্মীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। সাজ্জাদুজ্জান ছিলেন মোটরসাইকেলে। এ সময় মাটি মাটিভর্তি ডাম্প ট্রাকটি দিয়ে পাচারকারীরা সাজ্জাদের মোটরসাইকেল চাপা দেন। সেখানেই মৃত্যু হয় সাজ্জাদের। তার সঙ্গে থাকা বন রক্ষী মোহাম্মদ আলী আহত হন।
নিহত মো. সাজ্জাদুজ্জামান কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের দোছড়ি বন বিটের বিট কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার গজরিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শাহজাহানের ছেলে। আহত মোহাম্মদ আলী টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ঝিমংখালী এলাকার আবুল মঞ্জুরের ছেলে।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার অন্য আসামিরা হলেন— উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের পশ্চিম হরিণমারা এলাকার মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে ও ডাম্প ট্রাকটির চালক মো. বাপ্পী (২৩), একই এলাকার সুলতান আহম্মদের ছেলে ছৈয়দ আলম ওরফে কানা ছৈয়দ (৪০) ও তার ছেলে মো. তারেক (২০), রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল এলাকার নুরুল আলম মাইজ্জার ছেলে হেলাল উদ্দিন (২৭), হরিণমারা এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (৩৫), আব্দুর রহিমের ছেলে শাহ আলম (৩৫), হিজলিয়া এলাকার ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. বাবুল (৫০), একই এলাকার ফরিদ আলম ওরফে ফরিদ ড্রাইভারের ছেলে মো. রুবেল (২৪) এবং হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার (৩৯)। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।