উখিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়ায় টানা ভারী বর্ষণ পাহাড়ি ঢল ও সাগরের জোয়ারের পানি ঢুকে ৩৫টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। বহু কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে, গ্রামীণ সড়ক লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এছাড়া পানের বরজ নষ্ট হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জানা যায়, রাজাপালং ইউনিয়নের সিকদারবিল, কুতুপালং, মাছকারিয়া, লম্বাশিয়া তুতুরবিল, হিজলিয়া, পিনজির কুল ও আলিমুড়া। জালিয়াপালং ইউনিয়নের নম্বরী পাড়া, ঘাটঘর পাড়া পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি, সোনারপাড়া ডেইপাড়া মনখালি। হলদিয়াপালং ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া, রুমখা পালং, বড়বিল, পাতাবাড়ি, নলবুনিয়া, খেওয়া ছড়ি, বৌ বাজার, কুলাল পাড়া, মনির মার্কেট, পাগলির বিল। রত্নাপালং ইউনিয়নের সাদৃ কাটা, পশ্চিম রত্না, বড়ুয়াপাড়া, খোন্দকার পাডা, গয়াল মারা ও পালংখালী ইউনিয়নে থাইংখালী, রহমতের বিল, বালুখালী তৈল খোলা, আঞ্জুমান পাড়া ফারিবিল সহ অন্তত ৩৫ টি গ্রামে পানি তলিয়ে গেছে।
চারদিকে পানি আর পানি। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় অনেক গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। জনগণের শরম দুর্ভোগ বেড়েছে।
জালিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম সৈয়দ আলম জানান, সমুদ্র উপকূলীয় ডেইল পাড়া,নম্বরি পাড়া ও ঘাটঘর পাড়ায় কয়েকশো পরিবার পানিতে আটকা পড়েছে। এছাড়াও অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা ও পানের বরজ ভেঙ্গে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরী জানান, রুমখা চৌধুরী পাড়া, বউ বাজার, পাগলির বিল, বড়বিল মনি মার্কেট সহ বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। সবজি ক্ষেত সহ আমন মৌসুমের বীজতলা পানিতে ভেসে গেছে। স্থানীয় মৎস্য চাষীরা জানান, মৎস্য ঘেরে ও পুকুরে পানি ডুকে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
স্থানীয় নাগরিক সমাজের অভিযোগ, বিভিন্ন এনজিও সংস্থা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির প্রকল্প নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা সভা সেমিনারের নামে খরচ করলেও বন্যায় পানিবন্ধি মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। এটি খুব দুঃখজনক।
জালিয়াপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজন জানান, জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল মামুন বলেন সকল ইউনিয়নের জন প্রতিনিধিদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন জানান, প্রবল পানির স্রোতে অসংখ্য বীজ তলা ও পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। গ্রামীন অভ্যন্তরীণ অন্তত ২০ টি কাঁচা রাস্তা ও কালভার্ট বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আল মামুন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, ব্যক্তিগত উদ্যোগে উপজেলা নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন বহু প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভেরিফাই ফেইসবুকে এক জরুরি বার্তায , পাহাড়ের পাদদেশে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনগণকে নিরাপদ স্থানে কিংবা পার্শ্ববর্তী সাইক্লোসেন্টার আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
চাটগাঁ নিউজ/ইব্রাহিম/এআইকে