উখিয়া প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত শারমিন আক্তার লিজা (৮) নামের এক শিশু রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। স্বজনরা হাসপাতালে ভাঙচুর।
রবিবার (২৭ আগস্ট) রাতে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিমানিশু ওয়ার্ডে রোগীর মৃত্যু হয়৷
শারমিন আক্তার লিজা (৮) জালিয়াপালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ সোনাইছড়ি সমিতিরঘোনা এলাকার আফাজ উদ্দিনের মেয়ে৷
অভিযোগের সূত্র জানা যায়, শারমিন আক্তার লিজা জ্বরে আক্রান্ত হলে রবিবার বিকালে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্বরত চিকিৎসক ডেঙ্গু টেস্ট দিলে কোট বাজার অরিজিন হাসপাতালের টেস্টের রিপোর্টে পজিটিভ আসলে আবারও উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে৷ পরে রোগীকে নিরাপদ মা ও নিরাপদ শিশু (নিমানিশু) ওয়ার্ডে ভর্তি দেয়৷ ভর্তি দেওয়া পরপরই ডাক্তারের পরামর্শে নার্স স্যালাইন দেওয়ার এক ঘন্টা পরে রোগীর অবস্থা আশঙ্কা জনক দেখা যায়৷ রোগীর স্বজনরা ডিউটি ডাক্তার ও নার্সকে দেখার অনুরোধ করলে কর্তব্যরত ডাক্তার রোগী দেখতে না আসায় রোগীর স্বজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে চিৎকার করলে হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্সরা রোগীর স্বজনদের একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে রোগী শারমিন আক্তার মারা যায়।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, মৃত রোগীর লাশ হাসপাতালের নিরাপদ মা ও নিরাপদ শিশু (নিমানিশু) ওয়ার্ডের বাহিরে রাখে৷ পরে রোগীর স্বজনরা ৯৯৯ এ কল দিলে উখিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে রোগীর স্বজনদেরকে উদ্ধার করে।
অভিযোগের বিষয়ে নিশ্চিত করে মৃত্যু রোগীর শারমিন আক্তার লিজা মামা খালেকুজ্জামান বলেন, আমার ভাগিনী হঠাৎ জ্বর হলে পরিক্ষা করার পর ডেঙ্গু পজেটিভ আসলে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার ভর্তি করার কিছুক্ষণের মধ্যে রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে ডাক্তারকে ডাকতে গেলে ডাক্তার ঘুম থেকে উঠে রোগী দেখতে আসবে বললেও আসে নাই।পরে রোগী মৃত্যু নিশ্চিত হলে ডাক্তার এসে রোগী দেখে মৃত্যু হওয়ার বিষয়টি তিনি লিখিত ভাবে জানান৷ আমরা চিৎকার করলে নার্স ও গার্ড কর্মীরা আমাদের একটি রুমের মধ্যে আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে আমার উদ্ধার করে লাশ সহ বাড়িতে পৌঁছে দিয়৷ আজ সোমবার সকালে রোগীর দাফন সম্পন্ন হয়।
এদিকে উখিয়া স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা রঞ্জন বড়ুয়া রাজন জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার সাজেদুল ইমরান সাওনের সাথে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানার জন্য অনুরোধ করেন।
৯৯৯ এ ফোন পেয়ে উখিয়া থানার এসআই সাজ্জাদ উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে মুঠোফোনে জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখি উশৃংখল অবস্থা, পরিবর্তন শান্ত করে রোগীরদের উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার সাজেদুল ইমরান সাওন বলেন, শারমিন আক্তার লিজা নামের ডেঙ্গু রোগী দেখার পর আশঙ্কা জনক দেখে আমরা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করতে চাইলে রোগীর স্বজনরা মুচলেকা (বনস্বাক্ষর) দিয়ে রোগী ভর্তি করার পরপরই চিকিৎসা শুরু করার পূর্বে রোগী মৃত্যু হয়৷ রোগীর স্বজনরা চিকিৎসক ও নার্স এবং হাসপাতালের মালামাল ভাঙচুর করে। পরে আমরা পুলিশ এনে পরিবেশ শান্ত করি। এবিষয়ে উখিয়া থানায় অভিযোগ করি।