সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও প্রতিনিধি: কক্সবাজারের ঈদগাঁও মাছ বাজার বর্তমান অবস্থান থেকে অল্প দূরেই অস্থায়ীভাবে তৈরি করা হয়েছে অবকাঠামো। বর্তমান অবস্থানে সরকারি উদ্যোগ দুই তলা বিশিষ্ট মাছ বাজার মার্কেট নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছে। শীঘ্রই এর কার্যক্রম শুরু হলে এখানে আর মাছ বেচাকেনা করা যাবে না।
তারই প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যস্থতায় পার্শ্ববর্তী স্থানে ব্যক্তি মালিকানাধীন খালি স্থানে অস্থায়ীভাবে মাছ বাজারের শেড তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, মাছ ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে কর্মরত শ্রমিকরা শেড তৈরির কাজ চালাচ্ছে। নিচে বালি এবং ইট দিয়ে বেচাকেনা ও চলাচল উপযোগী করা হচ্ছে। গাছ দিয়ে অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে মাছ বাজারের শেড। প্রায় আশি কড়া জমির উপর মাছ বাজারটি গড়ে তোলা হচ্ছে। মাঝখানে চলাচলের পথ সহ উত্তর- দক্ষিণ এবং পূর্ব- পশ্চিম মুখী স্থাপনা তৈরি কাজে বাজারের মাছ ব্যবসায়ীরা তা দেখ ভালো করছেন।
জমির মালিকানার সাথে সংশ্লিষ্ট মাওলানা নুরুল ইসলাম জানান, ঈদগাঁও উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকারিয়ার অনুরোধ ও ইচ্ছা অনুসারে তাদের মালিকানাধীন এ জমিতে অস্থায়ী মাছ বাজার নির্মাণ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে নির্মিতব্য মাছ বাজার মার্কেট নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত এখানে মাছ ব্যবসায়ীরা তাদের দৈনন্দিন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবেন।
তিনি আরো জানান, উক্ত এলাকায় তাদের পৈতৃক প্রায় দুইশত কড়া জমি রয়েছে। দীর্ঘ বছর এ জমি খালি ও পরিত্যক্ত ছিল। তবে ইতোমধ্যে তার কজন ভাই জমির নিজ নিজ অংশে স্থায়ী- অস্থায়ী স্থাপনা তৈরি করেছেন। বর্তমানে প্রায় ৮০ কড়া জমি খালি রয়েছে। ইউএনওর অভিপ্রায় অনুসারে এ জমিতে মাছ ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার সুবিধা দিতে যাচ্ছি।
তারই বড় ভাই মাজহারুল হক, ফরিদ কোম্পানি এবং আলহাজ্ব শফিউল আলমের অংশেও তাদের সম্মতি সাপেক্ষে মাছ বাজারের অবকাঠামো তৈরির সুযোগ দেয়া হচ্ছে।
তবে অবকাঠামোর নির্মাণ খরচ বাজার ইজারাদারের অর্থায়নে হবে। কাজ শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত মালিক পক্ষের সাথে ইজারাদারের কোন চুক্তিপত্র করা হয়নি। তবে তিনি জানান, আশা করছি একটা চুক্তিপত্র হবে এবং সংশ্লিষ্টরা ভাড়াও পরিশোধ করবেন। তিনি জানান, ভাড়া বড় কথা নয়। প্রশাসন যেহেতু চেয়েছে সেহেতু আমরা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ঈদগাঁও বাজারের ইজারাদার রমজানুল আলম কোম্পানি জানান, ১৪২৯ বাংলা সনের পহেলা বৈশাখ বাজারের মাছ বাজার শেডটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলা হয়। টেন্ডার, সরকারি বরাদ্দ অনুমোদন ও অন্যান্য জটিলতার কারণে দীর্ঘ ১৫ মাস উক্ত বাজার শেড তৈরির উদ্যোগ দেখা যায়নি। বার্ষিক তিন কোটি পনের লাখ পঁচিশ হাজার টাকা রাজস্ব দিয়ে তিনি ঈদগাঁও বাজারের ইজার নেন। এ বাজারে মাত্র দুইটি স্থায়ী শেড রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে মাছ বাজার শেড ও মরিচ বাজার শেড। মাছ বাজার শেডটি ভেঙ্গে ফেলায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি তিনিও অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কয়েকদিন আগে মাছ বাজার মার্কেটের ভিত্তি প্রস্তর আনুষ্ঠানিকভাবে স্থাপন হয়েছে। ব্যবসায়ীদের চাওয়া মতে নতুন স্থানে বাজারের কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এখাতে অবকাঠামো তৈরি ও ভাড়া সহ আনুষাঙ্গিক খরচ তাকেই বহন করতে হবে। এতেও তার প্রচুর ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। মাছ ব্যবসায়ীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে এবং তাদের ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান।
ইজারাদার আরো জানান, জমির মালিক পক্ষ ভাড়া হিসেবে এক লক্ষ টাকা ডিমান্ড করেছিলেন। তবে এখনো চুক্তিপত্র সম্পাদন ও ভাড়া নির্ধারণ হয়নি। সাধারণ বাজারবাসীর সুবিধার্থে তিনি জমির মালিক পক্ষের সাথে চুক্তিপত্র সম্পাদনে আগ্রহী।
তিনি আরো জানান, প্রথমে মাছ বাজারের পুরনো শেড ভেঙ্গে ফেলার পর বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা পরিষদ মাছ বাজারটি হ্যান্ডলিং করতে ইচ্ছুক ছিলেন। এতে সাধারণ মাছ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণের অসুবিধা হতে পারে এ চিন্তা মাথায় রেখে প্রশাসনকে আমরা নিজেরা ব্যবস্থাপনা করবো বলে জানাই।
ঈদগাঁও বাজার ব্যবসায়ী পরিচালনা পরিষদের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান তারেক বলেন, সাধারণ মাছ ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে প্রশাসনিক সমন্বয়ে নতুন স্থানে মাছ বাজার স্থাপন করা হচ্ছে। এর যাবতীয় ব্যয়ভার বাজার ইজারাদারের পক্ষ থেকে খরচ করা হবে।
মাছ বাজারের মূল মার্কেট তৈরি হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের আবার সেখানে ফিরিয়ে আনা হবে।