ঈদগাঁওয়ে রাখালকে মারধর, ২ সপ্তাহ পর মৃত্যু

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও প্রতিনিধি: গোয়াল ঘর থেকে গরু ছুটে যাওয়ায় হামিদ উল্লাহ নামের এক রাখালকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে গরুর মালিক। গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হামিদ উল্লাহ দীর্ঘ ২ সপ্তাহ ধরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর বুধবার দিবাগত-রাতে মৃত্যু বরণ করেন।

হামিদ উল্লাহ কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের হাছিনা পাড়া এলাকার মকতুল হোসেনের ছেলে। গত (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তার বসতবাড়িস্থ উঠানে সংগঠিত ঘটনায় জড়িতরা বর্তমানে পলাতক রয়েছে।

হামিদ উল্লাহর নিকটাত্মীয় দেলোয়ার হোসেন জানান, হামিদ উল্লাহ দরিদ্র পরিবারের সদস্য ১ স্ত্রী, ২ মেয়ে, ১ ছেলে সন্তান নিয়ে বিভিন্ন জনের গরু মহিষ চারণ করে সংসার চালিয়ে আসছিল। সম্প্রতি সে হাছিনা পাড়া এলাকার মৃত ফয়েজুর রহমানের ছেলে নুরুল আলম প্রকাশ নুরাইয়ার বাড়িতে রাখাল হিসেবে দিনমজুরী নিয়ে গরু গুলো দেখভাল ও চারণ করে আসছিল।

দেলোয়ার হোসেন আরো বলেন, সারাদিন বন পাহাড়ে গরু চারণ করে সন্ধ্যায় গৃহস্থ নুরুল আলম প্রকাশ নুরাইয়ার বাড়ির গোয়াল ঘরে গরু গুলো বেঁধে রেখে হামিদ উল্লাহ তার বাড়িতে চলে যায়। এদিন বেঁধে রাখা গরু থেকে একটি গরু রশি ছুটে গিয়ে হারিয়ে যায়, পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ খবর নিয়ে হারিয়ে যাওয়া গরুটি ফিরে পায়।

এ বিষয়ে গৃহস্থ নুরুল আলম প্রকাশ নুরাইয়া গরু হারিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে হামিদ উল্লাহর বাসায় গিয়ে হাঁকাবকা করে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওই সময় হামিদ উল্লাহকে লক্ষ্য করে মাথায় বারি মারে নুরুল আলম প্রকাশ নুরাইয়া।ঘটনাটি চাউর হলে নুরুল আলমকে আটকে রাখে স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে তার আত্মীয় আবুল হাসেমের ছেলে হান্নান, মজিদ খানের ছেলে ফারুক, নুরুল আলমের স্ত্রী ইয়াছমিন, বোন মাহফুজাসহ ৬/৭ জন দুষ্কৃতকারী হামিদ উল্লাহর বাসায় গিয়ে পূনরায় হামলা চালিয়ে নুরুল আলম প্রকাশ নুরাইয়াকে ছিনিয়ে নেয়।

পরে আহত হামিদকে উদ্ধার করে ঈদগাঁওস্থ একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানেও অবস্থা অবনতি হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।

দীর্ঘ ১৫ দিন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ২২ নভেম্বর দিবাগত-রাতে বাড়ি ফেরার পথে চট্টগ্রাম নতুন ব্রীজ এলাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। একই দিন ময়না তদন্ত শেষে হামিদ উল্লাহকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঈদগাঁও থানার ওসি গোলাম কবির জানিয়েছেন, সংগঠিত ঘটনায় একটি অভিযোগ পেয়েছি, সেটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে।

Scroll to Top