আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইরানে ইসরায়েলির হামলায় অন্তত ৭৮ জন নিহত হয়েছেন ও আহত হয়েছেন অন্তত ৩২৯ জন। দেশটির রেভল্যুশনারি গার্ড পরিচালিত নিউজ এজেন্সি ফার্সের বরাতে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুর প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী হামলায় ৭০ জনেরও বেশি নিহত ও ৩২৯ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় ভোররাতে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ শুরু করে ইসরায়েল। এটি ইরানে এ পর্যন্ত চালানো সবচেয়ে বড় অভিযান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। হামলার শুরুতেই অন্তত ২০০ যুদ্ধবিমান অংশ নেয় এবং ১০০টিরও বেশি স্থানে আক্রমণ চালায়। এর মধ্যে রয়েছে পরমাণু স্থাপনা, ব্যালিস্টিক মিসাইল ঘাঁটি, সামরিক ঘাঁটি ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
পরবর্তী সময়ে আরও একধারায় হামলা চালায় ইসরায়েল, যার ফলশ্রুতিতে ইরানের সেনাপ্রধান ও বিপ্লবী গার্ডের ঊর্ধ্বতন অনেক সেনা কর্মকর্তা এবং পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলতে থাকবে। এর লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক মিসাইল কর্মসূচিকে ধ্বংস করা। অপরদিকে, এই হামলার কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টার পরও তেহরানে একাধিক হামলা চালায় ইসরায়েল। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, রাজধানীর ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডের সদর দপ্তরেও হামলা হয়েছে। এরপর মধ্য ইরানে নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেছেন, ইরানে আগাম ও আত্মরক্ষামূলক হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলজুড়ে বিশেষ জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, অদূর ভবিষ্যতে দেশটির সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় মিসাইল ও ড্রোন হামলা হতে পারে- সে আশঙ্কায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, অপারেশনের লক্ষ্য হলো ইরানে পারমাণিবক কর্মসূচি ও ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবস্থায় আঘাত হানা। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত লক্ষ্য পূরণ না হয়, অভিযান চলতে থাকবে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীর উত্তর-পূর্ব দিকে বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে। তবে এর ফলাফলে কি ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, রাজধানীর আশপাশে ৬-৯টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আবাসিক এলাকা পর্যন্ত হামলা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, হামলার পর রাজধানীর ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন যে, ওয়াশিংটন এই হামলায় জড়িত ছিল না। ওয়াশিংটন বলছে যে, তাদের অগ্রাধিকার হলো মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখা।
চাটগাঁ নিউজ/জেএইচ