চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : চট্টগ্রাম নগরীতে মাকে খুনের ঘটনায় এক কিশোরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই কিশোরী খুন হওয়া নারীর পালিত সন্তান। ভারতীয় অভিনেত্রী ও শাস্ত্রীয় নৃত্যশিল্পী মালবিকা সেনের নৃত্য ও ইয়োগা অনুশীলনের কারণে কিশোরীর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন মা। এ নিয়ে ঝগড়ার একপর্যায়ে মাকে কাঠের টুকরা দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করে ওই কিশোরী।
ঘটনার চারদিন পর শুক্রবার (২৪ মে) হেফাজতে নেওয়া মায়ের হত্যার কথা স্বীকার করেছে কিশোরী।
নিহত আনোয়ারা বেগম (৫৭) নগরীর পাহাড়তলী থানার দক্ষিণ কাট্টলী ছদু চৌধুরী রোডে চৌধুরী আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পালিত মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায়। পালিত মেয়ে ১৭ বছর বয়সী কিশোরী স্থানীয় একটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার মঈনুর রহমান জানান, আনোয়ারা বেগমের প্রথম সংসারে তিন ছেলে আছে। প্রথম স্বামী মারা যাবার পর তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই সংসারে কোনো সন্তান না হওয়ায় মেয়েটিকে দত্তক নিয়েছিলেন। বছরখানেক আগে দ্বিতীয় স্বামীও মারা যান। দ্বিতীয় স্বামীর বোনের লন্ডন থেকে পাঠানো টাকা এবং আগের সংসারের তিন ছেলের সাহায্য নিয়ে তিনি পালিত মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।
গত ২০ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পালিত মেয়ে আনোয়ারার বড় ছেলে আরিফুলকে ফোন করে জানায়, তার মাকে কে বা কারা মাথায় কাঠের টুকরা দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেছে। মাসুম দ্রুত ওই বাসায় গিয়ে মাকে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। কিন্তু আইসিইউতে শয্যা খালি না পেয়ে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ মে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় আরিফুল হক মাসুম বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় আনোয়ারা বেগমের পালিত মেয়েকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে মাকে খুনের বিস্তারিত বর্ণনা দেয় কিশোরী মেয়েটি। মূলত ইউটিউবের ভিডিও দেখে মেয়েটি বাসায় ইয়োগা, যোগাসনসহ বিভিন্ন ধরনের যোগব্যায়াম শুরু করেন, যা আনোয়ারা বেগম পছন্দ করছিলেন না। তার মনে আরও সন্দেহ হয় যে, মেয়ে অমুসলিম কোনো ছেলের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েছে। এসব নিয়ে মনোমালিন্যের এক পর্যায়ে মাকে খুন করে কিশোরী।
শনিবার কিশোরীকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজিরের মাধ্যমে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় এ পুলিশ কর্মকর্তা।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ