সিপ্লাস ডেস্ক: গুয়াইয়াকিল শহরের একটি কারাগারে অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বন্দি নিহত হন। ইকুয়েডরের সবচেয়ে বিপজ্জনক এই কারাগারে শনি ও রোববারের সহিংসতায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) করা এক পোস্টে এই কারাগারটিতে মৃতের সংখ্যা ১৮ থেকে বেড়ে ৩১ জন আর আহতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে বলে জানায়। এ সহিংসতায় শহরটিতে তাদের দপ্তরে ককটেল হামলায় এক বেসামরিক আহত হয়েছেন।
সরকারি তথ্য, দেশব্যাপী ছয়টি কারাগারে জিম্মি করে রাখা প্রায় ১২০ জনের মতো কর্মকর্তাকে মুক্ত করা হয়েছে। তবে বেশ কয়েকটি কারাগারে অনশন ধর্মঘট শুরু হয়েছে, এমন কথা শোনা গেলেও সরকারিভাবে এ বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।
আগামী ২০ আগস্ট ইকুয়েডরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিছু প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী নির্বাচিত হলে কারাগার সংস্কার করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ নির্বাচন ঘিরে কারাগারগুলোতে এসব সহিংসতা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রেসিডেন্ট গিয়েরমো লাসো কারাগারগুলোতে নিয়মিত জরুরি অবস্থা জারি করে চলেছেন। এর আগে সরকার কারাগারগুলোতে দুই মাসের জরুরি অবস্থা জারি করেছিল।
দুই মাসের জরুরি অবস্থা জারির পর গুয়াইয়াকিল শহরের পেনিতেনশিয়ারিয়া দেল লিতোরাল কারাগারে ব্যাপকভাবে সজ্জিত ২৭০০ সেনা ও পুলিশ প্রবেশ করে। তারা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ চালিয়ে তিনটি সেলব্লকের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে।
সরকারের এক বিবৃতিতে, জরুরি ঘোষণাই ইসমিরালডাস শহরে সহিংসতা শুরুর কারণ হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এখানে স্থানীয় কারাগারে ১৫ জন কারারক্ষী ও অন্য দুজন কর্মীকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসমিরালডাস শহরে পুলিশের একটি ইউনিটের ওপর হামলা চালানো হয়, পেট্রল পাম্পে বোমা পুঁতে রাখা হয় এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট গিয়েরমো লাসো জরুরি অবস্থা জারি করে যে ডিক্রি স্বাক্ষর করেছেন সেটা অনুযায়ী- গুয়াইয়াকিলের বন্দিরা সহিংসতা চলার সময় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে এবং কারাগারটিতে আগুন ধরাতে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করেছে।
রোববার সান্তা শহরের মেয়র আগুস্তিন ইন্ত্রিয়াগো গুলিতে নিহত হওয়ার পর লাসো সোমবার মানাবি ও লস রিওস প্রদেশে এবং দুরান শহরে জরুরি অবস্থা জারি করেন।
সরকার জানিয়েছে, ইকুয়েডরের কারাগারগুলোতে নিয়ন্ত্রণ ফিরে না আসা পর্যন্ত এবং বন্দি ও কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সামরিক হস্তক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
২০২১ সাল থেকে ইকুয়েডরের কারাগারগুলোতে সহিংসতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তারপর থেকে একের পর এক সহিংসতায় এ পর্যন্ত কয়েকশ বন্দির মৃত্যু হয়েছে। এসব সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রেসিডেন্ট লাসো কারাগারগুলোতে নিয়মিত জরুরি অবস্থা জারি করে চলেছেন।