চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : কর্মচারীদের দিয়ে সিন্ডিকেট করে ঋণের নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চার শাখা থেকে ৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর প্রতিষ্ঠানের সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি, সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির সদস্য বশির আহম্মেদসহ ১১৫ জনের বিরুদ্ধে ৮ মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসির (ইউসিবি)- বিভিন্ন শাখায় আটটি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে চলতি হিসাব খুলে ঋণের নামে ৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক, শীর্ষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ মোট ১১৫ জনের বিরুদ্ধে ৮টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুদক জানায়, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই ও ব্যাংকের সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি, সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, অন্যান্য পরিচালক ও কর্মকর্তাদের একটি সিন্ডিকেট এ আত্মসাতে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ইউসিবির চকবাজার, পোর্ট, পাহাড়তলী ও বহদ্দারহাট শাখায় এশিয়া এন্টারপ্রাইজ, মুন এন্টারপ্রাইজ, ইসলাম এন্টারপ্রাইজ, সান-সাইন এন্টারপ্রাইজ, আলম এন্টারপ্রাইজ, জুপিটার এন্টারপ্রাইজ, নাজিম অ্যান্ড সন্স এবং আল-রাজি এন্টারপ্রাইজ নামে ৮টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের চলতি হিসাব খোলা হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বত্বাধিকারী হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম ব্যবহার করা হয়, যারা প্রকৃতপক্ষে এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ইউসিবিএলের বিভিন্ন শাখায় এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণের মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে। এর মধ্যে চকবাজার শাখায় এশিয়া এন্টারপ্রাইজের নামে ৮ কোটি টাকা, মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৭ কোটি টাকা, ইসলাম এন্টারপ্রাইজের নামে ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং সান-সাইন এন্টারপ্রাইজের নামে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।
এছাড়া পোর্ট শাখায় আলম এন্টারপ্রাইজের নামে ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও জুপিটার এন্টারপ্রাইজের নামে ৯ কোটি টাকা, পাহাড়তলী শাখায় নাজিম অ্যান্ড সন্সের নামে ৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা এবং বহদ্দারহাট শাখায় আল-রাজি এন্টারপ্রাইজের নামে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে।
সব মিলিয়ে এসব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মোট ৫৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক।
অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন- ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি (ইউসিবিএল)-এর সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী ওরফে রনি, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক পরিচালক এম এ সবুর, হাজী ইউনুছ আহমদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক পরিচালক আসিফুজ্জামান চৌধুরী এবং রোকসানা জামান চৌধুরী।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইউসিবি ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, ‘ব্যাংকটির সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতেই দুদক মামলাগুলো করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই যে অনিয়ম ও কারসাজির মাধ্যমে ইউসিবি থেকে গ্রাহকদের আমানত আত্মসাৎকারীরা কোনো অবস্থাতেই ছাড় পাবে না। এ ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতীতের সব অনিয়মের যথাযথ প্রতিকার চায় ব্যাংকটি এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বর্তমান পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা পর্ষদ স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় ও আপসহীন।’
চাটগাঁ নিউজ/এসএ






