সিপ্লাস ডেস্ক: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল ৩টা ৫ মিনিটে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দেন দুই নেতা।
এর আগে প্রকল্পের পরিচিতি তুলে ধরেন পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর।
এরপর পারমাণবিক জ্বালানি উৎপাদন ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রথম ব্যাচের ইউরেনিয়াম হস্তান্তর সম্পর্কিত ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন। এছাড়া শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ডিজি রাফায়েল মারিয়ানো গ্রসি, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্সিই লিখাচেভ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত রয়েছেন পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নায়েব আলী বিশ্বাস ও পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথাসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ।
বাংলাদেশে পারমাণবিক মর্যাদার শুরুটা ১৯৬১ সালে। সেসময় পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে পদ্মা নদী তীরবর্তী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার। পরে নানা সীমাবদ্ধতায় সেটি বন্ধ হয়ে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। ধীরে ধীরে প্রকল্পের কাজ এগোতে শুরু করলেও পঁচাত্তর-পরবর্তীকালে তা আবারও স্থবির হয়ে পড়ে।
এভাবেই নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে ছয় দশকের অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। রাশিয়ার ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে ইউরেনিয়াম জ্বালানির যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প দেশের রাজনৈতিক বিভিন্ন কালপর্বে বারবার বাধার মুখে পড়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার দুই দশক পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে আবারও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নিউক্লিয়ার অ্যাকশন প্ল্যান নেয়। এর এক যুগ পর ২০০৮ সালে নতুন করে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়।
এরপর বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে প্রায় ১৫ বছরে প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, পারমাণবিক শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।