চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : সুপ্রিম কোর্ট ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলার এক বছর পূর্ণ হচ্ছে বুধবার (২৬ নভেম্বর)। মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন নিহতের পরিবার ও আইনজীবীরা।
২০২৪ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত ভবন এলাকায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে নগরের কোতোয়ালী থানায় ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।
২০২৫ সালের ১ জুন আলিফ হত্যা মামলায় চট্টগ্রাম আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন সিএমপির কোতোয়ালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ৩৮ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। গত ২৫ আগস্ট তৎকালীন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আলাউদ্দিন মাহমুদের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার দাখিল করা চার্জশিটের গ্রহণযোগ্যতার শুনানি শেষে সুকান্ত দত্তসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছিলেন আদালত।
৩১ জনকে আসামি করে মামলার এজাহার দায়ের করা হলেও এজাহারনামীয় গগন দাশ, বিশাল দাশ ও রাজকাপুর মেথরের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতির আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে নতুন করে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ আরও ১০ জনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করে মোট ৩৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল। চার্জশিটে আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- চন্দন দাশ মেথর, রিপন দাশ, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শুভ কান্তি দাশ, আমান দাশ, বুঞ্জা, রনব, বিধান, বিকাশ, রমিত প্রকাশ দাস, রুমিত দাস, নয়ন দাশ, ওমকার দাশ, বিশাল, লালা দাশ, সামীর, সোহেল দাশ, শিব কুমার, বিগলাল, পরাশ, গণেশ, ওম দাস, পপি, অজয়, দেবী চরণ, দেব, জয়, লালা মেথর, দুর্লভ দাস, সুমিত দাশ, সনু দাস, সকু দাস, ভাজন, আশিক, শাহিত, শিবা দাস ও দ্বীপ দাস।
মামলার বাদী ও আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তাকে আর ফিরে পাওয়া যাবে না। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। আমরা পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার চাই। এক বছর হয়ে গেলেও বিচার শুরু হয়নি। দ্রুত বিচার শেষ করার পাশাপাশি মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
আলিফের ব্যাচমেট ও মামলার আইনজীবী, সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী বলেন, আলিফ হত্যা মামলায় মোট ৩৯ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। এর মধ্যে ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮ জন এখনো পলাতক রয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে। পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির জন্য আদালত তাগিদ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলাটি চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছি।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার বলেন, বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় আইনজীবী ভবনের সামনে দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল তিনটায় সমিতির অডিটোরিয়ামে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়েছে। আমরা আলিফ হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের জোর দাবি জানাচ্ছি।
চাটগাঁ নিউজ/এসএ







