আলিফ হত্যা মামলা : আসামিপক্ষে বাইরের আইনজীবী দাঁড়াতে বাধা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, আমিতো বলিনি বাইরে থেকে আইনজীবী এনে ডিফেন্স করতে পারবে না। তবে হত্যা মামলার একটি নিয়ম আছে। হত্যা মামলার কোর্ট যখন চলবে তখন কোর্ট নিজেই একজন আইনজীবী নিয়োগ করবেন আসামিপক্ষে। এটাকে স্টেট ডিফেন্স বলে। যিনি মারা গেছেন তিনি আমাদের সমিতির সদস্য, তাই আমরা মনে করি তার রক্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আসামিপক্ষে দাঁড়িয়ে কেউ আসামি নির্দোষ এটা যেন না বলে সেই অনুরোধ করেছি। তবে আইনজীবী থাকবে না—এমনটা বলিনি।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডোভোকেট মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে উগ্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনের অনুসারীরা নির্মমভাবে কুপিয়ে, লাঠিপেঠা করে নির্মমভাবে হত্যা করেন। তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও তার প্রাণহীন দেহের উপর পৈশাচিক ভাবে আঘাত করতে থাকেন। এমন নজিরবিহীন পৈশাচিক হত্যাকান্ড বিভিন্ন মিডিয়া ও আপনাদের মাধ্যমে সারাবিশ্ব ও বাংলাদেশের জনগণ অবলোকন করেন এবং স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ ও হতবাক হয়ে যান। দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ দেশব্যাপী এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী সংগঠন আদালতে কর্মবিরতী পালন, প্রতিবাদ সমাবেশ, শোক র‍্যালী, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। দেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুছ এ হত্যাকান্ডের তদন্ত ও দ্রুত যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে ১১টি দাবি তুলে ধরে এই আইনজীবী বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত যে সকল ইসকনের সন্ত্রাসী এখনো গ্রেপ্তার হয়নি তাদেরকে গ্রেপ্তারপূর্বক দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করে দোষীদের সর্বোচ্চ শান্তি মৃত্যুদণ্ডের জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, মসজিদ, আইনজীবীদের চেম্বার, গাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদানের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি, সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলাসমূহে অন্যতম আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, হত্যাকাণ্ডে দায়েরকৃত মামলাসমূহের চার্জশীট প্রদানপূর্বক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার নিষ্পত্তির কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে, ঘটনার দিন আদালত এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হব।

তিনি বলেন, শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের পক্ষে কোন বিজ্ঞ আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি, নির্মম ও পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না করে সকল প্রকার অপপ্রচার ও চক্রান্ত থেকে বিরত থাকার জন্য দেশী-বিদেশী সকল মহলের প্রতি উদার আহবান জানাচ্ছি।

শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের পরিবারের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি, নিরাপরাধ কোন ব্যক্তিকে হয়রানী না করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি, আদালত অঙ্গনের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি, আদালত অঙ্গনের সুদীর্ঘকালের সৌহার্দপূর্ণ সম্প্রীতি বজায় রাখা ও সহঅবস্থান নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

চাটগাঁ নিউজ/ইউডি 

Scroll to Top