সিপ্লাস ডেস্ক: ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছে গত শনিবার (১৯ আগস্ট)। এ খবরের পরপরই অস্থির হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের পেঁয়াজ বাজার। গত তিনদিনের ব্যবধানে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ টাকা।
শেষ দফায় মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ টাকা। এখন প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়, যা গত শনিবার ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। একদফা দাম বেড়ে রোববার (২০ আগস্ট) ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মঙ্গলবার রামপুরা, মালিবাগ ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে পেঁয়াজের এ নতুন দাম দেখা গেছে। তবে ভালোমানের দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা একদফা বেড়েছিল রোববার। ওই সময় ৮০ থেকে বেড়ে ৯০ টাকা হয়েছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, দেশি পেঁয়াজের দাম না বাড়লে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম গত দুদিনে ১০ টাকা বেড়েছে। শুধু খুচরায় নয়, রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি শ্যামবাজারেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। শনিবার ওই বাজারে প্রতি কেজি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, যা এখন ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে দেশি পেঁয়াজ পাইকারিতে কেজিপ্রতি ৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক আবদুল মাজেদ বলেন, ভারতে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। এর সঙ্গে ৪০ শতাংশ শুল্ক ১২-১৪ টাকা যোগ করলে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় দাঁড়ায়। ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে দেশের বন্দর পর্যন্ত আনতে খরচ হচ্ছে প্রতি কেজি ৮ টাকা। দেশের অভ্যন্তরের খরচ ও ঘাটতি হিসেবে নিলে পেঁয়াজের দাম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে প্রায় ৬০ থেকে ৬২ টাকা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ৩৫ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে। এর আগের বছর ৩৪ লাখ টন। ২০১৯-২০ অর্থবছর উৎপাদন হয়েছিল ২৬ লাখ টন। অর্থাৎ, গত তিন অর্থবছর ধারাবাহিকভাবে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে।
কৃষি খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, গত কয়েক বছরে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানিতে মাঝে মধ্যেই অনিশ্চয়তার পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তাই দেশে পেঁয়াজ চাষে আরও বেশি জোর দেওয়া হয়। কয়েক বছর ধরেই পেঁয়াজের ভালো দাম পাওয়ায় দেশের কৃষকেরা চাষে ঝুঁকছেন। তাতে উৎপাদন বাড়ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমতে শুরু করেছে। তবে, ব্যবসায়ীদের মনোভাবের পরিবর্তন হয়নি। পর্যাপ্ত পেঁয়াজ থাকার পরেও শুল্কায়নের খবরে দাম বাড়াচ্ছেন তারা।