আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মুক্তি দাবী চট্টগ্রাম সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদের

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : বৈষম্য বিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কারাবন্দী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মুক্তির দাবী জানিয়েছেন সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ।

শুক্রবার (২ আগষ্ট) এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে সরকারের অব্যাহত বাধা, গুলি, দমন, নিপীড়ন, মামলা, গ্রেপ্তার নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিগত ১৮ দিনে চট্টগ্রামে ৩৩ টি মামলায় বিএনপি সহ বিরোধী দলের প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার আহ্বায়ক সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নসরুল কাদির চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শাহনওয়াজ, এ্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার জানে আলম সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আতিকুজ্জামান বিল্লাহ, ড্যাব চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অধ্যাপক ডা. তমিজ উদ্দিন আহমেদ মানিক, ড্যাব মহানগর সভাপতি অধ্যাপক ডা. আব্বাস উদ্দিন, ড্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলম, জিয়া পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জসিম উদ্দিন ফিরোজ, সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান জসিম উদ্দিন চৌধুরী, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন কোর্ট বিল্ডিং শাখার আহ্বায়ক এডভোকেট মো. আলাউদ্দিন, সদস্য সচিব এডভোকেট আবদুল মান্নান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে বেসামাল হয়ে সরকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের হত্যা করে উল্টো বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করছে। বৈষম্য বিরোধী এই শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনে সম্পৃক্ত না থাকলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে তল্লাশি ও হয়রানি করা হচ্ছে। বিএনপির জাতীয় নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান ও সি. যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহম্মেদসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন কর্মসূচিতে ভীত হয়ে পড়েছে সরকার। তাই নির্যাতন চালিয়ে আন্দোলন দমন করছে। অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে গণহত্যা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার।

নেতৃবৃন্দ বলেন, চলমান বৈষম্য বিরোধী যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সেনাবহিনী ও তাদের দলের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে বর্বর গণহত্যা চালিয়েছে। মধ্যযুগীয় বর্বরতায় শাহাদাত বরণ করেছে শিশুসহ শত শত সাধারণ নাগরিক। চলছে রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানাদার বাহিনীর কায়দায় গণগ্রেফতার। সাধারণ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের রাস্তায় ধরে মোবাইল চেক, হয়রানির ও নির্বিচার গ্রেফতারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের উপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশের সন্ত্রাসীরা। আমরা এসকল ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একটি স্বাধীন দেশে এমন নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। আন্দোলনকে দমন করতে আওয়ামী সরকারের এধরনের নির্মম ভূমিকার নজির পৃথিবীর কোথাও নেই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার প্রধান ও সরকারের মন্ত্রী নেতারা প্রতিনিয়ত মিথ্যাচারে আশ্রয় নিয়ে বলছেন, তথাকথিত তৃতীয় শক্তি নাকি গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। অথচ সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে ছাত্রসহ সাধারণ জনতার কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। তা ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সরকারি দলের সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগের হাতে। তার পরেও সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য এ মিথ্যাচারের কোরাস গেয়েই চলেছে। তারা এখনো ছাত্র আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বর্বরোচিত কায়দায় সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার সেল নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ এবং গ্রেপ্তার চালিয়ে যাচ্ছে। তারা অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে গণহত্যা চালিয়ে বর্বর শাসন কায়েম করে যেভাবেই হোক ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এদেশের আপামর জনতা ছাত্র যুবকসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষের প্রতি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। পাশাপাশি অবিলম্বে কারপিউ প্রত্যাহার ও গণগ্রেফতার বন্ধ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ইতিপূর্বে চট্টগ্রামে গ্রেফতারকৃত বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সব নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।

চাটগাঁ নিউজ/এআইকে

Scroll to Top