সিপ্লাস ডেস্ক: বিশ্বকাপ দলে না থাকা নিয়ে বর্তমানে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে আলোচিত নাম তামিম ইকবাল। শুধু তাই নয়, তামিম ইস্যুটি দেশের ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’তে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে চলছে সব মহলে আলোচনা সমালোচনা।
তামিম ইকবালকে বাদ দিতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান! এই গুঞ্জনে যখন ক্রিকেট পাড়ায় তোলপাড়, তখন টি স্পোর্টসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, এমন মানসিকতার খেলোয়াড় আমি মনে করি না দলে দরকার আছে।
তামিমকে দলের বাইরে রাখা কিংবা তামিমকে ব্যাটিং অর্ডারে অবনমনের কোনো সিদ্ধান্ত বা মতামত জানাননি দাবি করলেও সাকিব প্রশ্ন তুলেছেন তামিমের ডেডিকেশন নিয়ে। তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে আমার কোনো ডিসকাশনই হয়নি। এই প্রশ্ন কোথা থেকে এসেছে আমি জানি না। যদি এরকম কেউ বলে থাকে, আমি নিশ্চিত এমন কেউই বলেছে যে অথোরাইজড মানুষ এবং আগে থেকেই আলাপ করে রাখছিল যাতে জানা থাকলে দুই পক্ষের জন্যই ভালো হয়। এরকম বলাতে খারাপ কিছু আছে বলে তো আমি মনে করি না। কেউ তো খারাপের জন্য বলবে না।’
তামিমকে ওপেনিংয়ের বদলে মিডল অর্ডারে ব্যাট করার প্রস্তাবে সাকিব দেখছেন না খারাপ কিছু। তার যুক্তি, ‘কেউ এই কথা যদি বলে থাকে, দলের কথা চিন্তা করেই বলেছে। একটা ম্যাচকে কেন্দ্র করে অনেক কিছু হয়, এভাবে করলে কেমন হয়, এমন কম্বিনেশন করলে কেমন হয়। কেউ যদি আগে থেকে এসব ক্লিয়ার রাখতে চায় আমার তো মনে হয় না আলোচনায় দোষের কিছু আছে। এটার প্রস্তাবও যদি কেউ দিয়ে থাকে, এটাতে কি দোষের কিছু আছে? নাকি এরকম কোনো প্রস্তাবই দেওয়া যাবে না? যে একজনকে আমি বলব, ওকে, ইউ ডু হোয়াটএভার ইউ ওয়ান্ট। টিম আগে না কোনো ইন্ডিভিজুয়াল আগে?’
এক্ষেত্রে সাকিব উদাহরণ টেনেছেন রোহিত শর্মার। সাকিব বলেন, ‘রোহিত শর্মার মতো খেলোয়াড় ৭ নম্বর থেকে ওপেনিংয়ে এসে ১০ হাজার রান করে ফেলেছে। ও যদি মাঝে মাঝে ৩-৪ এ খেলে বা ব্যাটিংয়ে না নামে এটা কি খুব বড় প্রবলেম? এটা আমার কাছে মনে হয় একদম বাচ্চা মানুষের মতো ইয়ে যে আমার ব্যাট শুধু আমিই খেলব আর কেউ খেলতে পারবে না। জিনিসটা হচ্ছে এমন। দলের প্রয়োজনে যে কেউ যেকোনো জায়গায় খেলতে রাজি থাকা উচিৎ। টিম ফার্স্ট। আপনি ইন্ডিভিজুয়ালি কি করলেন, একশ-দুইশ করলেন কিন্তু দল হারল, ডাজন্ট মেক এনি ডিফারেন্স। পারসোনাল এচিভমেন্ট দিয়ে আপনি কি করবেন? আপনার নিজের নাম কামাবেন? তার মানে শুধু নিজের কথা চিন্তা করছেন? ইউ আর নট থিঙ্কিং একাউট দ্য টিম এট অল। মানুষ এই পয়েন্টগুলোই বুঝে না। প্রস্তাবটা দলের কথা ভেবেই তো দেওয়া হয়েছে। এখানে খারাপ কী আছে? তোমার কি লাগবে আমাকে বলো, আমি নিজের সেরাটা চেষ্টা করি। তখনই না আপনি একজন টিম ম্যান। নাহলে তো আপনি কোনো টিম ম্যান না। আপনি নিজের রেকর্ড, সাকসেস, ফেইম ও নেইমের জন্য খেলছেন, দলের জন্য না।’
তামিমের ফিটনেস নিয়ে সাকিবের ছিল না মাথাব্যথা। তাকে দলে রাখা বা না রাখা নিয়ে জানাননি নিজের কোনো অভিমত। কেন উইলিয়ামসন ফুল ফিট না হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পারলে তামিম কেন নন, সমর্থকদের এই প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
সাকিব বলেন, ‘আমার কথা ইম্পরট্যান্ট না। আমাকে নিয়ে মানুষের সন্দেহ থাকতে পারে। এমএস ধোনি সব জিতেছে, তাকে তো মানেন। তার ঐ নলেজ, সেন্স আছে। ধোনি যদি বলে থাকে একটা খেলোয়াড় ফিট না কিন্তু খেলছে, সে দেশ ও দলের সাথে প্রতারণা করছে, আমার মনে হয় এটা মেনে নেওয়া উচিৎ। শুধু তামিম না, অন্য যেকোনো খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে হলেও একই বলতাম। আমি যদি শিওর না থাকি কোন খেলোয়াড় কোন ম্যাচ খেলবে। কেন উইলিয়ামসনের কথা ধরুন, আমি জানি ও প্রথম দুই ম্যাচ খেলবে না, এরপর খেলবে। কিন্তু আমি যদি জানি না কেউ ৭ নম্বর ম্যাচ খেলবে কি না, ৩ নম্বর ম্যাচ খেলবে কি না, প্রথম ম্যাচ খেলবে কি না আর আমি জানতে পারব ম্যাচের দিন সকাল বেলা, তখন দল সিলেক্ট করা অনেক কঠিন। এমন খেলোয়াড় আমি মনে করি না দলে দরকার আছে।’