‘আমাদের সব ছাত্রী বিবাহিত’—পাস করেনি কেউ

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: এ বছর মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষায় পিরোজপুরের দুটি বিদ্যালয় থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস করেনি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে বরিশাল বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী পাস না করা ১৬টি বিদ্যালয়ের তালিকায় ওই বিদ্যালয় দুটির নাম পাওয়া যায়।

বিদ্যালয় দুটি হলো—পিরোজপুর সদর উপজেলার জুজখোলা সম্মিলিত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং ভান্ডারিয়া উপজেলার মধ্য চড়াইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়।

জানা গেছে, সদর উপজেলার জুজখোলা সম্মিলিত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১২ জন এবং ভান্ডারিয়া উপজেলার মধ্য চড়াইল মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৭ জন এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল। তবে বিদ্যালয় দুটি থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় ৫ জন করে মোট ১০ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে এবং পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ১০ জনের কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি। বিদ্যালয় দুটিতে ১০ জন শিক্ষক আছেন এবং বিদ্যালয় দুটি এমপিওভুক্ত।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলার জুজখোলা গ্রামের এক অভিভাবক বলেন, এ বিদ্যালয়ে এবার কেউ পাস করতে পারেনি। এতে আমাদের এলাকার নাম খারাপ হচ্ছে। এখানে শিক্ষকরা তো প্রতিদিন আসেন, ঠিকমতো ক্লাস নেন কিনা সেটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দেখা প্রয়োজন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিষ্ঠান দুটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পরেও শিক্ষকদের অবহেলায় পড়ালেখার মান থমকে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিষ্ঠানের প্রতি শিক্ষা কর্মকর্তাদের কোনো তদারকি নেই।

সদর উপজেলার জুজখোলা সম্মিলিত মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উত্তম হালদার বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে এ বছর ১২ জনের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছিলাম। তার মধ্যে ৫ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং সবাই ফেল করেছে। আমাদের সব ছাত্রী বিবাহিত হওয়ায় ঠিকমতো ক্লাসে আসেনি। তাই লেখাপড়া করতে পারেনি, এ কারণেই সম্ভবত এমন হয়েছে।

ভান্ডারিয়া উপজেলার মধ্য চড়াইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ বছর আমাদের স্কুল থেকে ৭ জন রেজিস্ট্রেশন করেছিল। এর মধ্যে ৪ জন নিয়মিত এবং ১ জন অনিয়মিতভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। গ্রাম পর্যায়ের স্কুল হওয়ায় সবাই নিয়মিত ক্লাস করে না। এরা বাসায়ও ঠিকমতো পড়াশোনা করে না। যার ফলে উত্তীর্ণ হতে পারেনি।

এ বিষয়ে পিরোজপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী আযিযী বলেন, এ বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য এখনো পাইনি, এসব তথ্য মূলত বোর্ডে থাকে। খোঁজ নিয়ে পরে আপনাকে জানাবো।

চাটগাঁ নিউজ/এমকেএন

Scroll to Top