চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: বাজারে সয়াবিন তেলের দাম আবার বেড়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পাইকারিতে তেলের দাম মণপ্রতি (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) ৩০০-৩৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। এমন অবস্থায় ভ্যাট ট্যাক্সের চাপে পড়া ভোক্তা সাধারণ তেলের চাপে আরেক দফা চ্যাপ্টা হতে চলছে।
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত সয়াবিন তেলের পাইকারি দাম মণপ্রতি ৬ হাজার ২৫০ টাকা ছিল। তবে এক সপ্তাহ ধরে তা আবার ৬ হাজার ৬০০ থেকে স্থান বিশেষে ৬ হাজার ৬৫০ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ পাইকারিতে সয়াবিন তেলের কেজি কেনা পড়ছে ১৭৪ টাকার কিছু বেশি। পাইকারি বাজারে তেলের এমন মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব ইতোমধ্যেই খুচরা বাজারে পড়তে শুরু করেছে। সয়াবিন তেলের খুচরা মূল্য কেজিতে প্রায় ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
জানা গেছে, ভোজ্যতেলের দাম কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত অক্টোবরে জারি করা এক আদেশে সয়াবিন তেল,পাম অয়েল উৎপাদন ও ব্যবসায়িক পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ মওকুফ করে। ওই আদেশে এ পণ্যটির ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন করও ছাড় দেয়া হয়। আরেক আদেশে সয়াবিন তেল কিংবা পাম অয়েল আমদানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। দুই দফায় শুল্ক কমানোর পরও বাজারে কমেনি তেলের দাম। দাম না কমায় লোকসান এড়াতে খোলাবাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সাপ্লাইও বন্ধ করে দিয়েছিল ডিলাররা।
মিল মালিকদের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গত ৯ ডিসেম্বর বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলের নতুন দাম অনুমোদন দেয়। নতুন দাম অনুযায়ী বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ থেকে ১৭৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ এবং খোলা পাম অয়েলের লিটারও ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা করা হয়। এছাড়া বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮১৮ থেকে বাড়িয়ে ৮৬০ টাকা করা হয়। এক মাস ধরে এ দামেই চলছিল সয়াবিন। কিন্তু আসন্ন রমজানকে টার্গেট করে আবারও তেলের দাম বেড়ে গেছে।
এ ব্যাপারে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এসএম নাজের হোসাইন চাটগাঁ নিউজকে বলেন,ব্যবসায়ীরা প্রতিবছর নানা অজুহাতে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। আর এজন্য তাদেরকে কোনভাবেই আইনের মুখোমুখি হতে হয়নি। তেলের সরবরাহ কমিয়ে দেয়া দাম বাড়ানোর একটা কৌশল। কয়েকদিন আগেই লিটার প্রতি ৮ টাকা বাড়িয়ে এখন আবারও দাম বাড়ানোর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে তারা।
তিনি আরও বলেন, এভাবে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে দাম বাড়ানোর সুযোগ পাবার কারণে বারবার একই পন্থা অবলম্বন করছেন ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ব বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমতির দিকে। তখন বাংলাদেশে ব্যবসায়ীরা একপয়সাও কমায়নি। এবার বিশ্ববাজারে দাম একটু বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে তেলের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন তারা। আর সরকার সেখানে সায় দিচ্ছে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি