চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ কিনা তা নিশ্চিত করতে শফিকুল ইসলাম শফিক (৪৬) নামে এক বিএনপি কর্মীর মরদেহ দাফনের চার মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোনাব্বর হোসেনের উপস্থিতিতে উপজেলার বিশনন্দী ইউনিয়নের গাজীপুরা কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। নিহত শফিকুল ইসলাম শফিক উপজেলার বালিয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।
আড়াইহাজার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনিসুর রহমান লাশ উত্তোলনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শফিকুলের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার গত ২১ আগস্ট ৪৫ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করে আড়াইহাজার থানায় মামলা করেন। তাছলিমা মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট তাঁর স্বামী শফিকুল, ভাশুর, দেবরসহ সচেতন নাগরিক হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। আসামিরা ওই দিন সন্ধ্যায় আড়াইহাজার উপজেলার বালুয়াকান্দী গ্রামে তাঁর স্বামীকে গালিগালাজ করতে থাকেন। শফিকুল গালমন্দ করতে নিষেধ করায় আসামিদের নির্দেশে আনসার আলীর হুকুমে রিফাতের হাতে থাকা চায়নিজ কুড়াল দিয়ে কোপ দিয়ে তাঁকে রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে আসামি ইয়াসিন তাঁর স্বামীর মুখে গামছা বেঁধে দেন, যাতে আওয়াজ না হয়। ঘটনাস্থলেই তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়।
এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক এমপি শামীম ওসমান, সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী, সাবেক এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, সাবেক এমপি কায়সার হাসনাত আবদুল্লাহসহ ৪৫ আসামির নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। নিহতের পরিবার শফিকুলকে বিএনপির কর্মী বলে দাবি করে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, ওই দিন শফিকুলের সঙ্গে তাঁর চাচাদের জমিসহ পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলেই শফিকুল মারা যান। মামলার বাদী আসামিদের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। এ মামলায় গত অক্টোবরে ছয়জনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আইনজীবীর মাধ্যমে মামলার নানা বিষয় আদালতের নজরে আনেন। পরে কখন এবং কীভাবে শফিকুলের মৃত্যু হয়েছে তা নির্ণয়ের জন্য ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
চাটগাঁ নিউজ/ইউডি