চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : সরকার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ডাইভার্ট করতে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীকে নিষিদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
সোমবার (১২ আগস্ট) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি একথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমীর বলেন, কেউ নিষিদ্ধ করলেই নিষিদ্ধ হয়ে যায় না। সরকার আন্দোলনকে ডাইভার্ট করতে জামায়াত নিষিদ্ধ করে। এটা জনগণও বোঝে।
তিনি আরও বলেন, দেশ আমাদের সবার। দেশ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকব। আমরা যদি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করি সবাইকে সহযোগী করি, এখন যারা দায়িত্বে এসেছেন তাদেরকে সহযোগিতা করি; তাহলে দেশ একটা শৃঙ্খলা ও সুন্দরের মধ্যে আসবে বলে আমরা মনে করি।
জামায়াতের আমির বলেন, আন্দোলনে যারা শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের জন্য দোয়া করেছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের প্রতি সহানুভূতি ও সুস্থতা কামনা করেছি। দেশের বিভিন্ন ভালো মন্দ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।
ড. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ যারা আছেন তাদের উপর বিভিন্ন জায়গায় কিছু হামলা হয়েছে। হামলা ধর্মীয় কারণে হয়েছে নাকি রাজনৈতিক কারণ আছে, সেটা খুঁজে বের করতে হবে। বিভিন্ন ধর্মের নেতারাই বলেছেন যেসব মামলা হয়েছে সেগুলোকে ধর্মীয় হামলা বলে চালানো যাবে না। একজন রাজনীতি করতো, রাজনীতি করতে গিয়ে মানুষের উপর অনেক অপরাধ করেছে, সেই ক্ষোভ থেকে হয়ত তার উপর হামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে কোনো কোনো দেশ বিশেষভাবে জড়িয়ে পড়ছে, বাংলাদেশের ব্যাপারে ভীতি পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এখন সেই দেশেরই বিবেকবান মিডিয়াগুলো প্রতিবাদ করছে। বিশেষ করে, আমাদের দলের নাম নিয়েও ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা পোস্ট এডিটোরিয়াল লেখছে। বলছে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন তারা তো হাতে লাঠি নিয়ে মন্দির পাহারা দিচ্ছে। যারা মন্দির পাহারা দিচ্ছে তাদেরকে কেন অহেতুক ব্লেইম দেন। তারাই প্রতিবাদ করছে এখন আর আমাদের প্রতিবাদ করার দরকার হচ্ছে না।
বাংলাদেশে কেউ ষড়যন্ত্র করতে চাইলেও জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে আর পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা এখানে দলীয় দাবি নিয়ে আসি নাই। জাতীয় স্বার্থের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। দলীয় বিষয় আছে, এগুলো থাকবে। কথা হচ্ছে যে কেউ আমাদের নিষিদ্ধ করে দিল, আমরা নিষিদ্ধ হয়ে গেলাম সেটা আমরা মনে করি না। শেষের দিকে সরকার অনেক ভুল কাজ করেছে। সেটার মাশুল হয়ত দেশবাসীকে দিতে হবে, সরকারকে তো দিতেই হবে।
এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার পর জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে দলটির নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যুমনায় প্রবেশ করেন। সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
গত ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকার।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার ঘটনায় জামায়াত ও এর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের জড়িত থাকার অভিযোগ করে আসছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা। এমন পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নির্বাহী আদেশে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারা অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়।
চাটগাঁ নিউজ/এআইকে