আনোয়ারা প্রতিনিধি : আনোয়ারা উপজেলার বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান মো. নোয়াব আলীকে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা। তিনি আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অনুসারি বলে পরিচিত।
রবিবার (১৮ আগষ্ট) সাড়ে দশটার দিকে বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে এ গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটে। এসময় তার সাথে থাকা আরো দুজনকে দালাল দালাল বলে চড়থাপ্পড় মারেন জনতা।
জানা গেছে, গত ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বৈরাগ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে একক প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। এরপর থেকে স্থানীয় সালিশ ও বিভিন্ন কাজে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা। কিন্তু ক্ষমতাধর আওয়ামী লীগের দলীর চেয়ারম্যান হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাননি কেউ।
তবে গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকার আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরে সারাদেশের মতো আনোয়ারা উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে ছিলেন। এর মধ্যে আজ সকালে বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নোয়াব আলী পরিষদে গেলে স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে পড়েন। একপর্যায়ে চেয়ারম্যানকে গণধোলাই দেন তারা। এসময় চেয়ারম্যান নিজেকে বাঁচাতে দৌঁড়ে পালিয়ে একটি ভবনে উঠে যান। পরে তাকে স্থানীয় কয়েকজন উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হয়ে এলাকায় লুটপাটের মহোৎসবে মেতে উঠেছে চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। স্থানীয় সালিশে টাকা নিয়ে এক তরফা বিচার করেছে। বিভিন্ন চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজি করে গেছে। এলাকায় উন্নয়ন দূরে থাক দুর্নীতি সব লুটেপুটে খেয়েছে। নানা অনিয়ম চোখে দেখলেও প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি কেউ। আজ স্বাধীন দেশে প্রতিবাদ করার সুযোগ পেয়েছে স্থানীয়রা।
গণধোলাইয়ের শিকার বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যান নোয়াব আলীকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় মন্তব্য করে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন চাটগাঁ নিউজকে জানান, দীর্ঘ পনের বছর ভোট ডাকাতি করে জনগণের অধিকার হরণ করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে ক্ষমতা জব্দ করে রেখেছিল পলাতক স্বৈরাচার সরকার শেখ হাসিনা। তার পলায়নে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। তার আমলে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে সব একতরফা। তাই অবৈধ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের প্রতিহত করতে হবে। এরমধ্যে আজ বৈরাগ ইউপি চেয়ারম্যানকে গণধোলাই দিয়েছে বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। তার মতো সবাইকে এমন গণধোলাই দিয়ে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে।
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/এআইকে/এসএ