আনোয়ারা প্রতিনিধি : আনোয়ারায় পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হককে প্রধান আসামি করে ৪৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। মামলায় ছিনিয়ে নেওয়া আসামি মো. মোজাম্মেলকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।
রবিবার (৯ জুন) আনোয়ারা থানায় বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এর আগে শনিবার (৮ জুন) রাত ১১টার দিকে চাতরি-চৌমুহনী এলাকায় আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের মামলার আসামি গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পুলিশ উপর হামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় আনোয়ারা ও কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বৈরাগ ইউনিয়নের আনোয়ারা সেন্টার এলাকায় বাজেটকে স্বাগত জানানোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ান আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপ।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ১১টার দিকে আনোয়ারায় টানেলের প্রবেশমুখে সংঘর্ষের ঘটনার মামলার এক নম্বর আসামি মোজাম্মেলকে আটকের জন্য অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। অভিযানে আসামি মোজাম্মেলকে আটক করে হাতকড়া পড়াতে চাইলে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করেন তিনিসহ নেতাকর্মীরা। এসময় নবনির্বাচিত আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী মোজাম্মেল হকও পুলিশের কাজে বাধা দেন। একপর্যায়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়।
এছাড়া পুলিশের একটি গাড়ি ভাংচুর করে। একপর্যায়ে সরকারি জানমাল রক্ষার্থে, বেআইনী জনতা নিয়ন্ত্রণে এবং গ্রেফতার আসামীকে পুলিশ হেফাজতে আনার জন্য বারবার মৌখিকভাবে অনুরোধ করা স্বত্ত্বেও স্থানীয়রা দাঙ্গা সৃষ্টি করলে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ-ছয় রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
এ বিষয়ে আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি সোহেল আহমেদ জানান, আসামি ছিনতাই ও পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ৪৪ জনের নাম উল্লেখসহ ৬০/৭০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। আসামিদের আটকের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (৭ জুন) বিকালে উপজেলার বন্দর সেন্টার এলাকায় বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করতে গিয়ে সাবেক মন্ত্রী স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ’র সমর্থিত গ্রুপ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি’র সমর্থিত গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ দুই গ্রুপের কয়েক ডজন নেতাকর্মী ও এক পুলিশ সদস্য আহত হন। এতে কর্ণফুলী থানায় ওয়াসিকা গ্রুপের ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ ১২০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়।
চাটগাঁ নিউজ/সাজ্জাদ/এসএ