আজ মা দিবস, পৃথিবীর সব মায়েরা ভালো থাকুক

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : ’মা’ একটি ক্ষুদ্র শব্দ হলেও পৃথিবীর সবচেয়ে মধুরতম শব্দ। মা শব্দটি উচ্চারণ করার সাথে সাথেই মনের মধ্যে শান্তির পরশ ছুয়ে যায়। সন্তানের কাছে মায়ের কোল পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়। সন্তান যত বড়ই হোক না কেন মায়ের কাছে সেই শিশুই থাকে। মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক চিরন্তন। সকল কষ্ট দু:খ ও বিপদের আশ্রয় হয় মায়ের কোল।

মা’ কথাটি খুব ছোট অথচ মায়ের স্নেহ, মায়া- মমতা, ভালোবাসার সাথে পার্থিব কোন কিছুর তুলনা হয় না। যখন একটি শিশু পৃথিবীর আলো দেখে তখন তার মুখে প্রথম শব্দ ফুটে ওঠে মা। সন্তানের জীবনের প্রথম শিক্ষক মা এবং মায়ের শেষ ভালোবাসাও তার সন্তান। জীবন যুদ্ধের সব থেকে বড়ো যোদ্ধা হলেন মা। মাকে ছাড়া যেমন সন্তানের জীবন অসম্পূর্ণ তেমনি মায়ের জীবনও সন্তানকে ছাড়া একেবারেই অসম্পূর্ণ। পৃথিবীর সব ধর্মেই মায়ের মর্যাদা সর্বোচ্চ।

বর্তমানে প্রচলিত মা দিবসের সূচনা হয় ১৯০৮ সালে। গত শতাব্দীর শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার এক স্কুলশিক্ষিকা অ্যানা জারভিস সেখানকার পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা দেখে মর্মাহত হয়ে মায়ের জন্য বিশেষ দিন পালনের মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টি করার কথা ভাবলেন। তার সে ভাবনা বাস্তবায়নের আগেই ১৯০৫ সালের ৯ মে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর মেয়ে অ্যানা এম জারভিস মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণের উদ্দেশ্যে কাজ শুরু করেন। ১৯০৮ সালে তার মা ফিলাডেলফিয়ার যে গির্জায় উপাসনা করতেন, সেখানে সব মাকে নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মা দিবসের সূচনা করেন। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে আনুষ্ঠানিকভাবে মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মায়েদের জন্য উৎসর্গ করে সরকারি ছুটির দিন ঘোষণা করা হয়।

সন্তানের জন্য সব থেকে বেশি যে আত্মত্যাগ করতে পারে সে হলো মা। স্বার্থপর এই দুনিয়াতে নিঃস্বার্থভাবে শুধু মাই আমাদের ভালোবাসতে পারেন। যদিও মার সঙ্গে মনোমালিন্য হয়নি এমন সন্তান খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে ভালোবাসার মানুষ এই মায়ের সাথে মনোমালিন্য আজ মিটিয়ে নেয়ার দিন। দিনটি মায়ের সেবা করার কাজেও লাগাতে পারেন। করতে পারেন তার জন্য বিশেষ রান্না। দিতে পারেন তার পছন্দের কোন উপহার। মায়ের পছন্দের কোন জায়গায় তাকে বেড়াতে নিয়ে যেতে পারেন। যদি ব্যক্তিগত কিংবা কাজের সূত্রে মায়ের কাছ থেকে অনেক দূরে থাকেন তবে ফোন করে কিছুক্ষণ কথা বলে সময় কাটাতে পারেন।

যদিও অনেকেই মনে করেন মাকে ভালোবাসার জন্য বিশেষ কোনো দিনের প্রয়োজন নেই। কারণ প্রতিটি দিনই মাকে ভালোবাসার জন্য হওয়া উচিত। তবে প্রতিদিনের ভালোবাসাকে আরেকটু বাড়িয়ে বিশেষ করতে এই দিনটির গুরুত্বকে কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে মা দিবস পালন সেদিনই স্বার্থক হবে যেদিন স্বার্থান্বেসী, ক্ষমতার নেশায় অন্ধ বিশ্ব নেতাদের লোভের বলি হয়ে কোন মায়ের বুক খালি হবে না বা কোন শিশু তার মায়ের কোলের নিরাপদ আশ্রয় থেকে বিচ্ছিন্ন হবে না, কোন সন্তান তার মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসবে না।

পৃথিবীর সব মায়েরাই বিশ্ব মা দিবসে নিরাপদ ও শান্তিতে থাকুক। সন্তান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের প্রত্যাশা হোক এটাই।

চাটগাঁ নিউজ/এসআইএস

Scroll to Top