আজই শেষ ভিসার মেয়াদ, কোথায় যাচ্ছেন হাসিনা?

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : তীব্র গণ-আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিন ভারতের আশ্রয় নেন তিনি। কূটনৈতিক পাসপোর্টের ক্ষমতায় তিনি ভারতে ৪৫ দিন থাকতে পারেন বৈধভাবে। যদিও তার সে পাসপোর্ট বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কূটনৈতিক পাসপোর্টের দৌলতে ভারতে যে কয়দিন বৈধভাবে থাকতে পারেন তা পূর্ণ হচ্ছে আজ। এখন প্রশ্ন তার পরে কী করবে ভারত?

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, শুক্রবার থেকে শেখ হাসিনা কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন। মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়ে দিয়েছেন, কূটনৈতিক পাসপোর্টের দৌলতে শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হলেও তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর সম্ভাবনা নেই। তাহলে কোন বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? কোনো কোনো মহলের যুক্তি, হয়ত তিব্বতি ধর্মগুরু দলাই লামার মতো ‌‘সাময়িকভাবে’ রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হতে পারে হাসিনাকে। তবে ভারতে থাকার বিষয়টি এখন ভারতের সিদ্ধান্তের উপরেই নির্ভর করে রয়েছে।

শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয় শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে এনে তার বিচার করতে হবে। ইতোমধ্যে ছাত্র-জনতা হত্যার দায়ে একশরও বেশি মামলা হয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। এখন ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে না চাইলে কী করবে বাংলাদেশ?

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মঙ্গলবার বলেছেন, কোন আইনে শেখ হাসিনা ভারতে রয়েছেন তা জানা নেই। এ নিয়ে ভারতের কাছেও জোড় দিয়ে কিছু জানতে চায়নি ঢাকা।

জানা গেছে, দিল্লির উপকণ্ঠে একটি আধাসামরিক বাহিনীর অতিথি নিবাস বা ‘সেফ হাউসে’ থাকছেন তারা। যদিও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শুরুতেই দেশের পার্লামেন্টে জানিয়েছিলেন, ভারত সরকারের কাছে শেখ হাসিনা ‘সাময়িকভাবে’ এ দেশে আসার অনুমোদন চেয়েছিলেন এবং তা মঞ্জুর হওয়ার পরই তিনি ভারতের মাটিতে পা রেখেছেন।

শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হবে তা কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে রেখেছে ভারত। ভারতের বিভিন্ন সূত্রের খবর, শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করলে বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক ধরে রাখা কঠিন হবে। তাই ভারতের বিশ্বস্ত কোনো দেশে তার আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, শেখ হাসিনা একনায়ক পুতিনের দেশ রাশিয়ায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রাশিয়ার যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা যায়।

সূত্রের আরো খবর, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত রাশিয়ার হামলার ব্যাপারে নীরবতা পালন করে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্বেও রাশিয়ার সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করে। এর ফলে দুদেশের সাথে পূর্বের চেয়ে সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই ভারতের অনুরোধে শেখ হাসিনার রাশিয়ায় আশ্রয় পাওয়া সহজ।

তবুও জনমনে একটাই প্রশ্ন কোথায় থাকবেন হাসিনা? ভারতই হবে তার আশ্রয়স্থল নাকি অন্য কোনো দেশে আশ্রয় নিবেন তিনি? বিষয়টির জন্য অপেক্ষা করা লাগতে পারে আজ রাত পর্যন্ত অথবা আগামীকাল পর্যন্ত।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top