সিপ্লাস ডেস্ক: নির্বাচনী সংলাপকে ‘ফাঁদ’ হিসেবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। দুবার পাতানো নির্বাচন হয়েছে। তৃতীয়বারের মতো আর ফাঁদে পা দেবে না বিএনপি।
শনিবার (১০ জুন) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি নেতা গৌতম চক্রবর্তীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ স্মরণ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা এবং মন্ত্রীরা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাকি এখন ডেথ ইস্যু। ডেথ ইস্যু হবে কেন, এটাই এখন সব চাইতে লাইট ইস্যু। কারণ বিএনপি মনে করে সরকারের এই মুহূর্তে পদত্যাগ করা উচিত। কারণ এরা এতো চুরি করেছে, দুর্নীতি করেছে, তারা একটা সমস্যারও সমাধান করতে পারেনি। সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো কারণে নেই। যার জন্য বলেছি একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন। কারণ আমার যে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা, নির্বাচনের যে ব্যবস্থা এটাকে তারা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।
আওয়ামী লীগ জানে যে, তারা এতো চুরি করেছে যে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন হলে তারা ক্ষমতায় যাওয়া তো দূরে থাক, সংসদে ১০ শতাংশের বেশি ভোটও পাবে না, বলেন তিনি।
বাংলাদেশের মানুষ ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেখেছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আবার ওই জায়গায় ফেরত যাবে না মানুষ। ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা আমাদেরকে সংলাপে ডেকেছিল, আমরা গিয়েছিলাম। আমরা মনে করেছিলাম আলোচনার মাধ্যমে যদি একটা নিরপেক্ষ নির্বাচনের অবস্থা তৈরি হয়, তাহলে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হবে, তাদের ইচ্ছার সরকার গঠন হবে। এখন গতকাল আইনমন্ত্রী বলেছেন, যখন নির্বাচন চলবে, নির্বাচন কমিশনের সেই ক্ষমতা থাকবে তখন কাউকে আর গ্রেপ্তার বা আটক করা যাবে না। এই কথায় কে বিশ্বাস করবে। এটা রাখাল বালকের গল্পের মতো। মনে আছে সে গ্রামবাসীকে বোকা বানানোর জন্য প্রায় চিৎকার করতো বাঘ-বাঘ আসছে। গ্রামবাসী লাটি-সোটা নিয়ে বেরিয়ে আসতো আর রাখাল বালক হাসতো। তৃতীয়বার যখন সত্যি-সত্যি বাঘ আসে, সে চিৎকার শুরু করে, তখন আর কেউ আসেনি। আমরা তো দুইবার (২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে) প্রতারণার শিকার হয়েছি। তৃতীয়বার দেশের মানুষ আর প্রতারণার শিকার হবে না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, তোমাদের এসব অন্যায় কেউ ভুলবে না। কারণ তোমরা কখনও কোনোও ওয়াদা রক্ষা করোনি। তোমরা যখন যা জাতির সামনে বক্তব্য দিয়েছ, ওয়াদা করেছ তা রক্ষা করনি।
বিএনপি অবশ্যই নির্বাচন চায় উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, সেই নির্বাচনে তো জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হতে হবে। সেই প্রতিনিধি নির্বাচন করবে তার ইচ্ছা অনুযায়ী। কারণ সে তো এই দেশের মালিক। সংবিধান বলছে- এই দেশের মালিক হচ্ছে জনগণ। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন, তারাই নির্বাচন কমিশন করবে, তারাই নির্বাচনের আয়োজন করবে। জনগণ তার প্রতিনিধি নির্বাচন করবে।
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকারের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, সংগঠনের মহাসচিব এন, তরুণ দে প্রমুখ।