আগেও যেসব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হয়েছিল

চাটগাঁ নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের অনেক নজির রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত আইনের ভিত্তিতেই দেশের একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিষিদ্ধ হয়েছে।

স্বাধীনতার আগে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছিল। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্বাধীন সরকার স্বাধীনতাবিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়। সে সময় জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগের তিনটি অংশ ও পিডিএফসহ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলো নিষিদ্ধ করা হয়।

১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টি (পিবিএসপি) ও পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (পিবিসিপি) নিষিদ্ধ করা হয়। দুটি বামপন্থি মাওবাদী সংগঠন এখনও নিষিদ্ধ।

১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে বাকশাল গঠন করেন শেখ মুজিব। পরে ১৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর সামরিক শাসনের অধীনে বাকশালসহ সকল রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ করে দেওয়া হয়।১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মো. সায়েম রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে আওয়ামী লীগ পুনরায় সংগঠিত হয় জোহরা তাজউদ্দিনসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের নেতৃত্বে। যদিও দলটি বিভক্ত হয়ে পড়ে—একদিকে মালেক গ্রুপ, অন্যদিকে মিজান গ্রুপ।

জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেন। তবে জামায়াত ইসলামী তখনও নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। সে সময় তারা ইসলামিক ডেমোক্রেটিক লীগ (আইডিএল) নামের একটি দলের ব্যানারে ভোটে দাঁড়ায়।

২০১৩ সালে হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের শেষদিকে জামায়াত ও শিবিরকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

এ ছাড়া ২০০৫ সালে দেশজুড়ে বোমা হামলার পর জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশকে (জেএমবি) সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০৯ সালে হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ হয়। সবশেষ গত বছরের ২৩ অক্টোবর ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়।

সবশেষ গতকাল আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। জুলাই গণহত্যায় দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তাধীন অবস্থায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও দলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়নি, তবে কার্যত তাদের সব ধরনের রাজনৈতিক তৎপরতা বন্ধ রাখা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন দৃষ্টান্ত।

চাটগাঁ নিউজ/এসএ

Scroll to Top